ঘর গোছাচ্ছে বিএনপি, ধারাবাহিক বৈঠকে হাইকমান্ড
২৪ এপ্রিল ২০২১ ২০:০২
ঢাকা: মাঠের সব কর্মসূচি স্থগিত রেখে লকডাউনের মধ্যে ঘর গোছানোর কাজে হাত দিয়েছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে ধারাবিহক বৈঠক করছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত ১৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এ ধারাবাহিক বৈঠক।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এরই মধ্যে প্রথম পর্যয়ের পাঁচটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকে দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টারা অংশ নিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে দলের যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তারেক রহমান। বিএনপির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ধারাবাহিক বৈঠকের প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয় গত ১৬ এপ্রিল। সেই বৈঠকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা উকিল আব্দুস সাত্তার, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, মশিউর রহমান, আবুল খায়ের ভূইয়া, জয়নুল আবদিন ফারুক, মনিরুল হক চৌধুরী, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, অ্যাডভোকেট ফজলুল হক আসপিয়া, সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি, মো. আবদুল কাইয়ুম, এস এম জহিরুল ইসলাম ও ইসমাইল জবিউল্লা অংশ নেন।
এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীও অংশ নেন ওই বৈঠকে।
প্রথম ধাপের দ্বিতীয় বৈঠকটি অনুষ্ঠি হয় গত ১৭ এপ্রিল। এ বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুজাউদ্দিন আহমেদ, আবদুর রশিদ, অধ্যাপক তাজমেরী ইসলাম, ড. শাহিদা রফিক, গোলাম আকবর খন্দ্কার, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালি, তাহমিনা রুশদির লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক সুকমোল বড়ুয়া ও বিজন কান্তি সরকার অংশ নেন।
ধারাবাহিক বৈঠকের তৃতীয়টি অনুষ্ঠিত হয় ১৮ এপ্রিল। এ বৈঠকে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, অ্যাডভোকেট কামরুল মুনির, অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন, আফরোজা খান রিতা, আবদুস সালাম আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহজাদা মিয়া, এস এম ফজলুল হক, লে. কর্নেল (অব.) এম এ লতিফ খান, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, আবদুল হাই শিকদার, খন্দকার মোক্তাদির হোসেন ও আবদুল মান্নান তালুকদার।
প্রথম ধাপের চতুর্থ বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান ও মীর মো. নাসির উদ্দিন অংশ নেন।
প্রথম ধাপের শেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় গত ২১ এপ্রিল। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও শওকত মাহমুদ অংশ নেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরস্থিতি, বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস এবং এর প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ও আর্থসামাজিক সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির করণীয় নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। তবে ধারাবাহিক বৈঠকের মূল লক্ষ্যটা হচ্ছে— লকডাউনের ‘অবসর’ সময়টা কাজে লাগিয়ে দলের সব পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা।
দলীয় সূত্রমতে, বৈঠকে দেশের বিরাজমান রাজনীতি, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বেশ কিছু বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ করে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলের কোনো পর্যায়ের কোনো নেতা যেন হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত না নেন, বক্তব্য-বিবৃতির ক্ষেত্রে দলের মুখপাত্রের (মহাসচিব) বাইরে কেউ যেন কোনো ব্যাপারে আগ বাড়িয়ে কিছু না বলেন— এ বিষয়গুলো বিশেষভাবে উঠে এসেছে।
প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত পাঁচটি বৈঠকে সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দলের দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বৈঠকগুলোতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রয়োজনীয় কিছু দিকনির্দেশনা ছাড়া খুব বেশি কথা বলেননি। বৈঠকে অংশ নেওয়া ৫৬ জন নেতার বক্তব্য তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। সামনে আরও বৈঠক আছে। সবার বক্তব্য শোনার পর হয়তো চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা দেবেন।’
সারাবাংলা/এজেড/টিআর