নরসিংদী বিসিক সম্প্রসারণ: ভূমি উন্নয়নেই পার ৫ বছর!
২৫ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪২
ঢাকা: জমি জটিলতায় আটকে আছে নরসিংদী বিসিক শিল্প নগরী সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি ভূমি উন্নয়ন। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিল্প সচিব কে এম আলী আজন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আগামী জুনের মধ্যে আবশ্যিকভাবে ভূমি উন্নয়নের কাজ শেষ করার সময়মসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রকল্পটির স্টিয়ারিং কমিটির সভায় এসব বিষয় উঠে আসে। গত ৫ এপ্রিল ওই সভার জারি করা কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ৭৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ২০১৫ সালের জুলাই হতে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। পরবর্তী সময়ে পিডব্লিউডি’র রেট সিডিউল পরিবর্তনের কারণে মোট প্রাক্কলিত ব্যয় বেড়ে ১২৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা করা হয় এবং মেয়াদ ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করে প্রথম সংশোধন করা হয়। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পটির ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৪৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ। অর্থাৎ শুরু হতে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৬০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এছাড়া বাস্তব অগ্রগতি ৫০ দশমিক ১৭ শতাংশ।
সভায় প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার সময় জানানো হয়, প্রকল্পের ৩০ একর ভূমি উন্নয়নের কাজের ৭৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটি ২০১৫ সালে শুরু হয়ে মাত্র ৩০ একর জমি উন্নয়ন এখন পর্যন্ত শেষ না হওয়ায় সভার সভাপতি শিল্প সচিব অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক সভায় জানান, প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ করতেই অনেক সময় চলে গেছে। এছাড়া ২০১৮ সালে পিডব্লিউডি’র রেট সিডিউল পরিবর্তন হওয়ায় ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংশোধন করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ফলে ভূমি উন্নয়ন কাজে দেরি হয়েছে।
পরে সভার সভাপতি শিল্প সচিব জানতে চান, ভূমি উন্নয়ন কাজ শেষ করতে কতদিন লাগবে?। উত্তরে প্রকল্প পরিচালক জানান, বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকায় বালি ভরাট সহজ হয়। তাই মে মাসে আবারও ভরাট কাজ শুরু হবে এবং প্রায় এক মাস সময় লাগবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নের কাজ আবশ্যিকভাবে সমাপ্ত করতে সভায় নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, প্রকল্পের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার সময় জমিতে পানি থাকায় সঠিকভাবে মাপা হয়নি। পরবর্তী সময়ে মেপে দেখা যায় ৩০ একর এর মধ্যে ২২ শতাংশ জমি কম হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগযোগ করা হলেও অবশিষ্ট জমি এখনও বুঝে পাওয়া যায়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (পরিকল্পনা) জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সভায় প্রকল্পের অন্যান্য কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে প্রকল্প পরিচালক জানান, পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় গত অর্থবছরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছ থেকে ডিমান্ড নোট সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এর সমাধান করা হবে। এছাড়া প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যেই ইজিপি’র মাধ্যমে ঠিকাদার নির্ধারণ করা হয়েছে। শিগগিরই ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘ড্রাইভার কোয়ার্টার ও ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য ইজিপিতে দরপত্র মূল্যায়নের কাজ চলমান। এছাড়া ড্রেন, কালভার্ট ও রাস্তা নির্মাণ এবং পানির লাইন স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।’
এছাড়া যেসব কাজ এখনো শুরু করা যায়নি বা দরপত্র মূল্যায়ন হয়নি সেগুলো দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে ওই সভায়।
সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম