কোভিড-১৯: টুইটারকে ভারতের আইনি নোটিশ
২৫ এপ্রিল ২০২১ ১৩:৫৫
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় ভারত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করে মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাই টুইটারে প্রকাশিত বার্তাগুলো সরিয়ে নিতে প্রতিষ্ঠানটিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে দিল্লি।
টুইটারের মুখপাত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, ভারত সরকারের আইনি অনুরোধের ভিত্তিতে বেশ কিছু টুইট বার্তা আটকে (উইথেল্ড) দেওয়া হয়েছে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘লুমেন ডেটাবেজ’ প্রকল্পের গবেষকদের কাছে টুইটার কর্তৃপক্ষ স্বীকারোক্তি দিয়ে জানায়, সমালোচনামূলক কিছু টুইট বার্তা সরিয়ে নিতে দিল্লি তাদের ওপর একটি তাৎক্ষণিক নির্দেশ জারি করে।
লুমেন-এ প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ভারত সরকারের আইনি অনুরোধে ২৩ এপ্রিল তারিখে টুইটার সদর দফতরে পাঠানো হয়েছিল এবং ২১টি টুইট বার্তা মুছে দেওয়ার কথা সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল। এসব টুইট বার্তার মধ্যে রেভনাথ রেড্ডি নামের একজন এমএলএ, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং অবিনাশ দাস নামের এক চলচ্চিত্র নির্মাতার টুইটও রয়েছে।
এদিকে, সরকারি আইনি নোটিশে ভারতের ২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের অধীনে তাদের এই এখতিয়ারের কথা ব্যাখা করেছে।
জবাবে ইমেইল বিবৃতিতে টুইটার মুখপাত্র বলেন, তারা যখন একটি বৈধ আইনি অনুরোধ পান তখন সেটি নীতিমালা এবং স্থানীয় আইনের নিরিখে পর্যালোচনা করে থাকেন।
কন্টেন্ট যদি টুইটারের নীতিমালা ভঙ্গ করে, তাৎক্ষণিকভাবে তা সরিয়ে ফেলা হয়। যদি ভঙ্গ না করে, কিন্তু শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট আইনি এলাকার আইনে বেআইনি হিসেবে বিবেচিত হয়, সেক্ষেত্রে তারা শুধু ওই এলাকা, অর্থাৎ ভারত থেকে ওই টুইট বার্তায় প্রবেশ বন্ধ করে দিয়ে থাকেন।
মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, টুইট বার্তা আটকে দেওয়ার বিষয়টি ব্যবহারকারীকে তারা সরাসরি জানিয়েছেন এবং তার বার্তাটি বন্ধ করাতে প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ পেতে হয়েছে তাও জানিয়েছেন।
এর আগে, প্রযুক্তিভিত্তিক ম্যাগাজিন টেকক্রানচ ভারত সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তারা জানায়, এই নির্দেশ শুধু টুইটার নয় ফেসবুকসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেই দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ভারতের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি দিনকে দিন কর্তৃপক্ষের আওতার বাইরে চল্র যাচ্ছে। দিল্লির নিরুপায় হাসপাতালগুলো জরুরিভিত্তিতে অক্সিজেন আর চিকিৎসা উপকরণের বাড়তি বরাদ্দের আদেশ চেয়ে এ সপ্তাহেই হাইকোর্টে গিয়েছিল।
তার প্রেক্ষিতে, দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে- এই ‘সুনামি’ সামাল দিতে তারা কীভাবে সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, গত শীতে পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো থাকায় বিধিনিষেধ যেভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে, সেটাই ভারতের জন্য কাল হয়েছে।
আবার কেউ কেউ বলছেন, ভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন ধরনগুলোই ভারতকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
সারাবাংলা/একেএম