জামালপুর: চারদিকে চাষ করা হয়েছে বোরো ধান। মাঝখানে খালের ওপর চারটি পা নিয়ে বহুদিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে একটি ব্রিজ। প্রথম দেখলে যে কেউ হতবাক হয়ে যাবে। ফলে ফসলের মাঠে চার স্প্যান বিশিষ্ট অভিশপ্ত এ ব্রিজটি জনসাধারণের কোনো কাজে আসেনি।
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউপিতে দেখা মেলে এমনি একটি ব্রিজের। ব্রিজটি মূলত নির্মাণের পর থেকেই সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গোল ডোবা খালের ওপর নির্মিত পাকা ব্রিজটি এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না। প্রায় ২০ বছর আগে জনস্বার্থে গ্রামীণ মাটির সড়কে নির্মাণ করা হয়েছিলো এটি। কিন্তু তারপর থেকেই ওই সড়কটি যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলে বাধ্য হয়েই গ্রামের মানুষ ১ কিলোমিটার পথ ঘুরে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করে চলছে।
জানা যায়, মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া গ্রাম থেকে ঘোষেরপাড়া-পূর্ব ছবিলাপুর পাকা সড়কে উঠার সংযোগ সড়কটি ওই গ্রামের কামরুলের বাড়ি থেকে আমজাদের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার মাটির সড়ক।
এ সড়ক দিয়েই ঘোষেরপাড়া গ্রামের মানুষ চলাচল করতো। প্রায় ২০ বছর আগে আশপাশের কৃষি জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য কাঁচা সড়কে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতু নির্মাণের ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও সংযোগ সড়কের মাটি ভরাট করা হয়নি। ফলে এটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
ঘোষেরপাড়া গ্রামের মনির মিলিটারি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের অবগত করলেও এ সংযোগ সড়কের সেতুটিতে মাটি ভরাট করা হচ্ছে না। ফলে গ্রামের লোকজনদের প্রায় এক কিলোমিটার পথ ঘুরে মেলান্দহ উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়।
একই গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, এলাকাবাসীদের বিকল্প সড়ক ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়কে মাটি ভরাট করা হলে মানুষের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে।
শিক্ষার্থী সাইদুর ইসলাম বাবু বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখছি ব্রিজটির এই অবস্থা। বর্ষা মৌসুমে বন্যার সময় আমাদের স্কুল কলেজে যেতে অনেক অসুবিধা হয়। অনেক সময় জরুরি কোনো রোগী নিয়ে যেতে পারে না মানুষ। দ্রুত সময়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে আমাদের দুর্ভোগ লাগব হবে এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর।
ঘোষেরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বলেন, আগে থেকেই সেখানে কোনো রাস্তা ছিলো না। সেতু নির্মাণের আগে থেকেই সড়কটি দিয়ে মানুষজনের চলাচল ছিল না। পাশের পাকা সড়ক দিয়েই চলাচল করেন এলাকাবাসী। তারপরও এখানে সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণে সাধারণ মানুষের একটু কাজে আসেনি।
মেলান্দহের ইউএনও তামিম আল ইয়ামিন জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।