‘মিথ্যা মামলা দিয়ে লাখ টাকা খরচাপাতি দাবি পুলিশের’
২৬ এপ্রিল ২০২১ ১৭:৪২
ঠাকুরগাঁও: জেলায় পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের কালেশ্বরগাঁও সরকারপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী একটি পরিবার। মামলার পর পুলিশের পক্ষ থেকে ‘খরচাপাতি’ হিসেবে লাখ টাকাও দাবি করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন মিঠু আহমেদ মিলন। এসময় উপস্থিত ছিলেন তার চাচা সফিজুর রহমান ও চাচাতো ভাই মানিক আলীসহ অন্যরা।
লিখিত বক্তব্যে মিঠু আহমেদ বলেন, ‘গত ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দেবীপুর ইউনিয়নের কালেশ্বরগাঁও সরকারপাড়া গ্রামে আমার চাচা মো. মমতাজ আলী (৬৫), চাচাতো ভাই মো. গোলাম রব্বানী (২৭) ও সাত্তার রহমান (৩৭) নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এমন সময় ঠাকুরগাঁও থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক জাবেদ আলীসহ ১০/১২ জনের পুলিশ সদস্য আমার চাচা ও ভাইদের থানায় তুলে নিয়ে যায়। থানায় নেওয়ার পর মোবাইল ফোনে ১ লাখ টাকা খরচপাতি দাবি করে পুলিশ। এরপর মারামারি ও গম চুরির নাটক সাজিয়ে আমার চাচা ও ভাইদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পুলিশ সার্জেন্ট সহিদুর রহমানই এসব ঘটনার পেছনে রয়েছেন। ৭০ বছরের অধিক সময় ধরে আমাদের ভোগদখলীয় জমি, যার রেকর্ড, দলিল, খাজনা, খারিজ ও মাঠ পর্চা রয়েছে। সেই জমি ২০১৭ সালে পুলিশ সার্জেন্ট সহিদুর রহমান ও তার পরিবার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জবরদখল করতে আসলে আমার বাবা, চাচা ও ভাইয়েরা বাধা দেয়। পরে তাদের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট ও রক্তাক্ত জখম করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দিতে গিলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো সহিদুরের পরিবারের দেওয়া মামলায় হয়রানি করতে থাকে। এতে আমরা বাড়ি ছাড়া হই।’
‘২০২০ সালে পুনরায় সেই জমি আবার জবরদখল করতে এসে আমার চাচা ও ভাইদের ওপর হামলা ও মারপিট করে তারা। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা না নেওয়ায় আমার বাবা নিরুপায় হয়ে সহিদুর রহমানকে ১নং আসামি দেখিয়ে আদালতে যান। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সদর থানাকে নির্দেশ দেন। যার মামলা নং সিআর-৩১৩/২০ (জিআর-২৯৭/২০)। অপরদিকে ২০১৭ সালে আমার বাবা ও চাচা ইসমাইল হোসেনসহ অন্যরা বাদি হয়ে আদালতে একটি সিভিল মামলা দায়ের করেন, যা চলমান রয়েছে। কিন্তু মামলার বাদী ইসমাইল হোসেন মারা যাওয়ার পর পুলিশ সার্জেন্ট সহিদুর রহমান ও তার পরিবার জমি দখলের জন্য বেপরোয়া হয়ে ওঠে’, বলেন তিনি।
মামলা তুলে নিতে সহিদুর রহমান ও তার পরিবার মিথ্যা ও বানোয়াট ঘটনা সৃষ্টি করে থানায় একের পর এক মিথ্যা মামলা ও বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে এবং আমাদের দায়েরকৃত মামলা থেকে অব্যাহতি নিতে ঠাকুরগাঁও থানা পুলিশকে দিয়ে হয়রানি করছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন মিলন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে এ ধরনের ঘটনা হলে সেটা দুঃখজনক, লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এমও