Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেশি মুনাফার লোভেই দাহ্য পদার্থ মজুদ করত ওরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ এপ্রিল ২০২১ ১৯:২৮

ঢাকা: অতিরিক্ত মুনাফার লোভেই পুরান ঢাকার আরমানিটোলার গোডাউনে অতি দাহ্য পদার্থ ও বিভিন্ন কেমিক্যাল মজুদ রাখত মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ মোস্তফা নামে দুই ব্যবসায়ী। মোস্তফা নিচে গোডাউনে দাহ্য পদার্থ রেখে ওপরে দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি নিজেও জানতেন যে, পরিবার নিয়ে মৃত্যুকুপে বাস করছেন। এরপরেও টাকার লোভ তাদের এ পেশা থেকে দূরে রাখতে পারেনি। কিংবা পরিবারকে অন্য কোথাও রাখেননি।

বিজ্ঞাপন

গত ২৩ এপ্রিল আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানসনে আগুন লাগলে গোডাউনের মালিক মোস্তফা ও মোস্তাফিজুর রহমান আত্মগোপনে চলে যান। র‌্যাব তাদের গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ সব তথ্য জানিয়েছেন।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব সদর দফতরের মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ সব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘আগুন লাগার পর অবস্থা বুঝতে পেরে জানালার গ্রিল কেটে মোহাম্মদ মোস্তফা দ্বিতীয় তলা থেকে বেরিয়ে যান। এরপর তিনি বগুড়ার নন্দীগ্রামে এক আত্মীয়ের বাসায় লুকিয়ে থাকেন।’

গ্রেফতারের পর মোস্তফা জানিয়েছেন, আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানশন ভবনের নিচ তলায় ১৫ হাজার টাকায় দোকান ভাড়া নিয়েছিল মোস্তাফিজুর রহমান (৪২) ও মোহাম্মদ মোস্তফা (৪৫)।

কেরানীগঞ্জের বাসায় ছিলেন মোস্তাফিজুর। তবে ভবনের দোতলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করা মোস্তফা আগুনের ঘটনায় গ্রিল কেটে পালান।

র‌্যাব পরিচালক বলেন, ‘৫/৭ বছর ধরে তারা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় স্ব স্ব গোডাউনে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ মজুদ করেছিল। এ জাতীয় কেমিক্যাল মজুদের ব্যাপারে তাদের কোনো অনুমতি ছিল না।’

এর আগে, সোমবার ভোরে র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে আরমানিটোলায় আগুনের ঘটনায় রুজুকৃত মামলার দুই নং আসামি মোস্তাফিজুর রহমানকে রাজধানীর উত্তরা থেকে ও তিন নং আসামী মোহাম্মদ মোস্তফাকে বগুড়ার নন্দিগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ২৩ এপ্রিল রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানশন নামক আবাসিক ভবনের নিচ তলায় রাসায়নিক/কেমিক্যাল দোকান ও গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

বিজ্ঞাপন

আগুনে ৪ নিহত এবং ২১ জন আহত হন। বর্তমানে আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রাত ৯টার দিকে মামলাটি করে। মামলায় আসামিরা হলেন ভবনের মালিক মোস্তফা আহম্মেদ এবং কেমিক্যাল গোডাউনের মালিকরা। র‌্যাব শুরু থেকে ছায়া তদন্ত করছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (২৬ এপ্রিল) ভোরে এজাহারনামীয় ২ নং আসামি মোস্তাফিজুর রহমান এবং ৩ নং আসামি মোহাম্মদ মোস্তফাকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় স্ব স্ব গোডাউনে বিভিন্ন কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ মজুদ করেছিল। এ জাতীয় কেমিক্যাল মজুদের ব্যাপারে তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি ছিল না।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক বলেন, ‘১৫ হাজার টাকা ভাড়ায় তারা প্রায় ৫/৭ বৎসর যাবত ওই ভবনের নিচ তলা ভাড়া নিয়ে কেমিক্যালের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। মোস্তাফিজুর রহমান মঈন অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী এবং মোহাম্মদ মোস্তফা মেসার্স আরএস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। প্রতিষ্ঠান দুটি হাজী মুসা ম্যানশনের নিচ তলায় অবস্থিত। ঘটনার পরবর্তীতে তারা আত্মগোপনে চলে যায়।’

ওই ভবনের দ্বোতলায় পরিবার নিয়ে থাকতে মোস্তফা। আগুনের রাতে পরিস্থিতি বুঝে মোস্তফা গ্রিল কেটে পালিয়ে যায়।

কমান্ডার মঈন বলেন, ভবনের মালিক মোস্তাক পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

আরমানিটোলায় কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন, গ্রেফতার ২
আরমানিটোলায় দগ্ধ নবদম্পতি লাইফ সাপোর্টে
আরমানিটোলায় আগুন: অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশের মামলা

সারাবাংলা/ইউজে/একে

আরমানিটোলা কেমিক্যাল গোডাউন টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর