হেফাজতের কর্মীরা জামাত-বিএনপির প্রতিনিধি: এসএম কামাল
২৭ এপ্রিল ২০২১ ০০:৪৮
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, হেফাজতে ইসলামের নামে বাবুনগরী, মামুনুল হক এবং অন্য নেতাকর্মীরা হচ্ছেন জামাত-বিএনপির প্রতিনিধি। তারা তারেক জিয়ার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের পর ধান কাটার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গত ১৬ মার্চ সর্ববৃহৎ ক্রপ ফিল্ড মোজাইক হিসেবে এই শস্যচিত্র গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের স্বীকৃতি পায়। আজ সেই শস্যচিত্রে খেতের ধান কাটা শুরু হল।
এসএম কামাল বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা বঙ্গবন্ধুকে বাঙালি থেকে আলাদা করতে চেয়েছিল, যারা বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করতে চেয়েছিল, তারা সেটা পারেনি। আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে দেখছি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম ভাষণের মধ্যে অন্যতম। এটা জাতিসংঘের ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে বারবার যারা মুছে ফেলতে চেয়েছেন, তারা বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায়ও বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করতেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু যখন অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর এই দেশকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন, তখন আমরা দেখেছি অতি ডান আর অতি বাম এক জায়গায় দাঁড়িয়ে মুসলিম বাংলার স্লোগান দিয়ে সেদিন বাংলাদেশে পাটের গুদামে আগুন দিয়েছেন। ঈদের জামাতে আওয়ামী লীগের এমপিকে গুলি করে হত্যা করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সেই শক্তি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে আবার বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সেই শক্তি এবং তাদের প্রতিনিধিরা আজকে বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র করছেন।
তিনি আরও বলেন, যারা একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, সেই পাকিস্তানি শক্তি আর তাদের এদেশের এজেন্টরা, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছেন তাদের প্রতিনিধিরা আর ২০১৪ সালের ২১শে আগস্ট যারা আমাদের প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছিল তাদের প্রতিনিধিরা আজকে জোট বেধেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিশ্বনেতারা যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন, তখন তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছেন। বলে দাবি করেন এসএম কামাল।
এস এম কামাল বলেন, আজকে হেফাজতে ইসলামের নামে যারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বিরোধিতা করেছেন, ওরা ইসলামের হেফাজতকারী না। ওরা জামাত-বিএনপির হেফাজতকারী। ওরা স্বাধীনতাবিরোধীদের হেফাজতকারী। ওরা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের হেফাজতকারী। বাবুনগরী আর মামুনুল হকরা হচ্ছে জামাত-বিএনপির প্রতিনিধি।
তিনি বলেন, ইসলামের হেফাজতকারী হচ্ছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাই গতবার করোনার সময় ১২২ কোটি টাকা দিয়েছেন মাদ্রাসায়। শেখ হাসিনাই ১৬ কোটি টাকা দিয়েছেন কওমী মাদ্রাসায়, শেখ হাসিনাই ৫৬০টি আধুনিক মসজিদ করেছেন ৮৭২২ কোটি ব্যয় করে। শেখ হাসিনা বায়তুল মোকারম মসজিদের সংস্কার করেছেন। ইসলামের হেফাজত করলে শেখ হাসিনা করেন।
ইসলামের হেফাজত বাবুনগরী-মামুনুল হকরা করেন না। শেখ হাসিনা হচ্ছেন সকল ধর্মের হেফাজতকারী। তাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দেশ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই নয়। আলেম সমাজ আর কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা আছেন, আমরা তাদের পাশে আছি। আমাদের সকলকে মাদ্রাসা এবং মাদ্রাসার ছাত্রদের বলতে হবে, যা কিছু করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা করেছেন, আর বাবুনগরী-মামুনুল হকরা তারেক জিয়ার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের পরিচালনায় ধান কাটা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন ‘শষ্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ জাতীয় পরিষদের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের সদস্য সচিব কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগিবুল হাসান রিপু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাক, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুলসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
সারাবাংলা/এনআর/এসএসএ