Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩১৩ অর্থদাতার সন্ধান, মামুনুলের অ্যাকাউন্টে লেনদেন ৬ কোটি: ডিবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ এপ্রিল ২০২১ ২০:২৫

ঢাকা: হেফাজতে ইসলামকে ৩১৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অর্থ জোগান দিত বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসব অর্থদাতাদের চিহ্নিতও করা হয়েছে জানিয়ে ডিবি পুলিশ বলছে, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ছয় কোটি টাকারও বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে এক অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

ডিবি প্রধান বলেন, হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ছয় কোটি টাকার বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আসা এই অর্থের উৎস নিয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

হাফিজ আক্তার বলেন, হেফাজতে ইসলামের সদ্যবিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর ছেলের বিয়েতেই সাবেক আমির আল্লামা শফীকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়। ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে মামুনুল হক, জুনায়েদ আল হাবিবসহ কয়েকজন নেতার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আল্লামা শফীকে সরিয়ে বাবুনগরীকে আমির করার পরিকল্পনা হয়।

এর আগে, গত এপ্রিল ১৮ মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে মামুনুল হককে একটি চুরির মামলায় গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে বিভিন্ন নাশকতার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। আদালতের অনুমতি নিয়ে তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ থেকেই বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন তথ্য।

এর মধ্যে গত শনিবার (২৪ এপ্রিল) গ্রেফতার হন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আহমদ আবদুল কাদের। তিনি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সাবেক সভাপতি।

বিজ্ঞাপন

ডিবি প্রধান বলেন, তার মতো হেফাজতে ইসলামের অধিকাংশই নেতাই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত। তদের সঙ্গে নিয়ে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে মাদরাসার শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সরকার উৎখাত করে ক্ষমতায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন মামুনুল।

এর আগে, গত ২৫ এপ্রিল ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, মামুনুল হকের সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও পাকিস্তান থেকে টাকা আসত তার নামে।

ডিসি হারুন বলেন, ‘আমরা জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, মুফতি নেয়ামত উল্যাহ যখন ১৫-২০ বছর পাকিস্তানে থাকার পর দেশে এসে মোহাম্মদপুরে জামিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন তখন তার সঙ্গে মামুনুল হকের আপন বোনকে বিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে তাদের মধ্যে একটা আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়। ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলায় জড়িত তাজের সঙ্গে মুফতি নেয়ামত উল্লাহর সম্পর্ক ছিল।’

‘এ হামলার ঘটনায় যখন নেয়ামত উল্লাহ গ্রেফতার হন তখন মামুনুল হকের বাবা আজিজুল হক ছিলেন চার দলীয় সরকারের নেতা। সেই সুবাদে তখন নেয়ামত উল্লাহকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনেন তিনি। এরপর মামুনুল হক এবং তার ভগ্নীপতি নেয়ামত উল্লাহ প্রায় ৪০ দিন পাকিস্তানে ছিলেন এবং সেখানে একটা ধর্মীয় দলকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করে সেটার আলোকে মওদুদি, সালাপি, হানাফি, কওমি এবং দেওবন্দিসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যক্তিদের একত্রিত করে রাষ্ট্রবিরোধী কাজের উদ্দেশ্যে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন,‘— বলেন ডিসি হারুন।

তিনি আরও বলেন, ‘এ যোগাযোগ রক্ষা করতে গিয়ে তার সঙ্গে পরিচয় হয় তার আপন ভায়রা ভাই কামরুল ইসলাম আনসারীর। কামরুল ইসলাম জামায়াতের বড় নেতা। ফরিদপুরের টেকেরহাটে তার বাড়ি। তার মাধ্যমে মামুনুল হকের সঙ্গে জামায়াতের গোপন আঁতাত ছিল। তার মাধ্যমে মামুনুল হক জামায়াতকেও তার বলয়ে আনার চেষ্টা করেছেন। আর এর মাধ্যমে হেফাজতকে কাজে লাগাতেন, দেশের কাউকেই তোয়াক্কা করতেন না।’

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

মামুনুল হক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর