Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২১ বিশিষ্টজনের অভিযোগ— বাঁশখালীতে পুলিশের ভূমিকা ছিল অমানবিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ এপ্রিল ২০২১ ২২:০২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারায় নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবোধক ও অমানবিক ছিল বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রামের ২১ বিশিষ্টজন। শ্রমিকদের প্রতি মানবিক আচরণ না করে পুলিশ সেদিন শক্তি প্রদর্শন ও গুলিবর্ষণের মাধ্যমে দমনের চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা বলেন, ‘সম্প্রতি বাঁশখালীর গণ্ডামারায় যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি অত্যন্ত অমানবিক ও মর্মান্তিক। এই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা জেনেছি যে কিছুদিন ধরে এসএস প্ল্যান্টে কর্মরত শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছিল।’

‘তাদের দাবির মধ্যে ছিল— রমজানের সময় ইফতারের পর ও শুক্রবার জুমার নামাজের পর কাজ বন্ধ রাখা, প্রত্যেক মাসের ৫ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে মজুরি প্রদান, শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, শ্রম আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে শ্রমিক ছাঁটাই না করা, বাসস্থান ও শৌচাগার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর রাখা এবং শ্রমিকদের ওপর চীনা কর্তৃপক্ষের নিপীড়নমূলক আচরণ বন্ধ করা। আমরা মনে করি, শ্রমিকদের দাবিগুলো ছিল অত্যন্ত যৌক্তিক ও আইনসম্মত। এই দাবি আমলে না নেওয়ায় এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।’

পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে তারা বলেন, ‘গণ্ডামারায় পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবোধক। পুলিশ নিরীহ শ্রমিকদের আইনসম্মত দাবির প্রতি মানবিক আচরণ না করে শক্তি প্রদর্শন ও গুলিবর্ষণের মাধ্যমে দমনপীড়ন করে সমাধানের চেষ্টা করেছে। একটি গণতান্ত্রিক ও কল্যাণ রাষ্ট্রে পুলিশের এই ভূমিকা কাম্য হতে পারে না। পুলিশের ভূমিকা রাষ্ট্র ও প্রশাসনকে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার মুখে ফেলে দিয়েছে এবং সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

গণ্ডামারায় শ্রমিক নিহতের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, নিহত শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও আহত শ্রমিকদের উন্নত চিকিৎসা এবং চিকিৎসাকালীন মজুরি ভাতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।

বিবৃতিতে সই করেছেন— শহীদজায়া বেগম মুশতারি শফী, কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, নারীনেত্রী নূরজাহান খান, অধ্যাপক রণজিৎ কুমার দে, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান,  খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সভাপতি ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সংগঠক ডা. চন্দন দাশ, ড. গনেশ রায়, অধ্যাপক হোসাইন কবির, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জানে আলম, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অ্যাডভোকেট আকতার কবির, চট্টগ্রাম জেলা গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অমল কান্তি নাথ ও ফজল আহাম্মদ, সাংবাদিক সুভাষ দে, জসিম উদ্দিন চৌধুরী সবুজ, নাজিম উদ্দিন শ্যামল, প্রদীপ দেওয়ানজী এবং সমরেশ বৈদ্য।

এর আগে, গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারায় এস আলম গ্রুপ ও চীনের একটি কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে নির্মাণাধীন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিতে অন্তত ছয় শ্রমিক নিহত হন। আহত হন ২০ জনেরও বেশি।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

২১ বিশিষ্টজনের বিবৃতি বাঁশখালীতে হত্যা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘আমাদের সেনাবাহিনী যেন তৈরি থাকে’
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:২৯

আগস্টে কমেছে মূল্যস্ফীতি
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৭

সম্পর্কিত খবর