দ্রুততম সময়ে চালু হবে বিজেএমসির বন্ধ মিল: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী
২৮ এপ্রিল ২০২১ ১৫:২৪
ঢাকা: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক বলেছেন, বিজেএমসির বন্ধ মিলগুলো দ্রুততম সময়ে ভাড়াভিত্তিক/ইজারা পদ্ধতিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ফের চালুর বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞপ্তির আওতায় দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা লিজ বা ইজারা নেওয়ার সুযোগ পাবে। এক্ষেত্রে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের মাসিক সমন্বয় সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালামসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর/সংস্থার প্রধানরা যুক্ত ছিলেন।
সভায় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘পৃথিবী জুড়ে পাটের কদর ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটচাষীরা বর্তমানে কাঁচা পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন। চলতি পাট মৌসুমে কাঁচা পাটের গড় দর ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। ফলে পাটচাষীরা এ মৌসুমে বেশি পরিমাণে পাট চাষে আগ্রহী হচ্ছে। এতে করে দেশের অর্থনীতিতে পাটখাতের অবদান আরও সুসংহত হবে বলে আশা করা যায়। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম নয়মাসে (জুলাই-মার্চ) পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৯৫৩ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। আর তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় বেশি ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ।’
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘বেসকারি ব্যবস্থাপনায় পুনরায় চালু করা মিলগুলোতে অবসায়নকৃত শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবে। সেইসঙ্গে এসব মিলে কর্মক্ষম ও দক্ষ শ্রমিকদের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সকল শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে অবশ্যই পুনর্বাসন করা হবে।’ বেসরকারি পাটকলগুলোর উৎপাদনশীলতা ও ব্যবস্থাপনার কৌশলের কারণে দেশের অর্থনীতিতে পাটখাতের অবদান আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জানান, বন্ধ ২৫টি মিলের মধ্যে চারটি মিলের (জাতীয়, খালিশপুর, দৌলতপুর ও কেএফডি) মিলের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি আগস্ট ২০২০ মাসে পরিশোধ করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত ও অবসায়নকৃত ৩৪ হাজার ৭৫৭ জন স্থায়ী শ্রমিকের পাওনাদি ২ লাখ টাকার ঊর্ধ্বের ক্ষেত্রে অর্ধেক নগদে ও অর্ধেক তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধের সিদ্ধান্ত আছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১টি মিলের সবগুলোতে নগদ অংশ পরিশোধের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৭৬৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৭৫৭ জন শ্রমিকের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে ১ হাজার ৬৬২ কোটি ১৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছেভ। যা মোট বরাদ্দের ৯৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘মামলা ও অডিট আপত্তিজনিত সমস্যা, শ্রমিকদের নামের সঙ্গে এনআইডির গরমিল, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাব না থাকার কারণে কিছু সংখ্যক শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ বিলম্বিত হচ্ছে। এসব সমস্যা নিরসনের জন্য শ্রমিক ও মিল/সংস্থা থেকে মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে এবং শ্রমিকদের নামের গরমিল সংশোধন করে ও ব্যাংক হিসাব খোলা মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সমস্যা নিরসন করে শিগগিরই নগদ অংশের শতভাগ পরিশোধের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। বাকি অর্ধেক সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র ইস্যু নির্ভর হওয়ায় বিষয়টি কিছুটা সময় সাপেক্ষ।’
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলোর বিরাজমান পরিস্থিত স্থায়ী সমাধানসহ পাটখাতে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন ২৫টি পাটকল ২০২০ সালের ১ জুলাই বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
সারাবাংলা/এসজে/পিটিএম
‘চালুস রোড’ গোলাম দস্তগীর গাজী চালু বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বিজেএমসি বীরপ্রতীক রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল