পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে বাংলাদেশের উদ্যোগে জাতিসংঘে রেজুলেশন পাস
২৯ এপ্রিল ২০২১ ০১:২০
পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে জাতিসংঘে এক ঐতিহাসিক রেজুলেশন গৃহীত হয়েছ। এই রেজুলেশন অনুযায়ী এখন থেকে প্রতিবছর ২৫ জুলাই ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করবে জাতিসংঘ। জাতিসংঘে এ রেজুলেশনটি বাংলাদেশ উত্থাপন করেছিল। রেজুুলেশনটি পাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে আয়ারল্যান্ডও।
এই রেজুলেশন পাসের মাধ্যমে জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম পানিতে ডুবে মৃত্যু বিষয়ক কোনো রেজুলেশন গৃহীত হলো।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য বলছে, গত এক দশকে বিশ্বে পানিতে ডুবে ২৫ লাখ প্রাণহানি হয়েছে। সচেতনতা ও যথাযথ প্রতিরোধী কার্যক্রম চলালে এসব মৃত্যুর বেশিরভাগই রোধ করা সম্ভব হতো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
জাতিসংঘে এই রেজুলেশন গৃহীত হওয়ার পেছনে অন্যতম উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। এর আগে ২০১৭ সালে জাতিসংঘের ১৫টি সদস্য রাষ্ট্রের সমন্বয়ে ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ’ বিষয়ক এক ‘গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস্’ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের উদ্যোগে পরে ৭৯টি সদস্য রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় এ রেজুলেশনটি এবার গৃহীত হলো।
রেজুলেশনে বলা হয়েছে, বিশ্বে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ৯০ শতাংশই ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। এশিয়ার দেশগুলোতেই পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতেমা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে এ রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন। এসময় তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ পানিতে ডুবে মৃত্যু। এমনকি মাতৃমৃত্যু বা অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর চেয়েও পানিতে ডুবে মৃত্যুর পরিমাণ বেশি। পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনার শিকার বেশি হয়ে থাকে শিশুরা। এমন শিশু মৃত্যুর শীর্ষস্থানীয় ভুক্তভোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এ সংক্রান্ত একটি রেজুলেশনের গুরুত্ব যথাযথভাবে অনুধাবন করে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাগুলোর তথ্য সংরক্ষণ করে থাকে গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পানিতে ডুবে মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, এই ১৫ মাসে সারাদেশে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনার খবর প্রকাশ হয়েছে ৫৭৯টি। এসব ঘটনায় পানিতে ডুবে মারা গেছেন ৯৬৮ জন। এর মধ্যে ৮০৮ জনই শিশু।
সারাবাংলা/আইই