ভয়াল ২৯ এপ্রিল আজ, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছিল উপকূল
২৯ এপ্রিল ২০২১ ১৪:৩৭
ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে টিকে আছে এই ব-দ্বীপের মানুষ। তবে এদেশের মানুষ এমন কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে যা যেখানেই আঘাত করেছে সে এলাকা ও আশপাশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। লাখো মানুষের মৃত্যু হয়েছে, বাস্তুহারা হয়েছে কোটি মানুষ।
আজকের এই দিনে এমনই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল চট্টগ্রাম উপকূলে। ১৯৯১ সালের সেই ঘূর্ণিঝড় লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিস্তীর্ণ উপকূল। ১২ থেকে ২২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস আর ঘন্টায় ২৪০ কিলোমিটার বাতাসের গতির সেই ঘূর্ণিঝড়কে আখ্যা দেওয়া হয় ‘শতাব্দীর প্রচণ্ডতম ঘূর্ণিঝড়’ হিসেবে।
ভয়ংকর সেই দুর্যোগে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা আরো বেশি। কারণ, সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন অনেকে। প্রলয়ঙ্করী সেই ঘূর্ণিঝড়ে এক কোটির বেশি মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়।
ঘূর্ণিঝড়ের পরদিন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার দৃশ্য ছিল অবর্ণনীয়। যেদিকে দু’চোখ যায়, শুধু লাশ। গাছপালা, বাড়িঘর লণ্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিলো। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল অবকাঠামোর।
হারিকেনের শক্তিসম্পন্ন প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতি হয়েছিল ১.৫ মিলিয়ন ডলার। চট্টগ্রাম বন্দরসহ নৌ ও বিমানবাহিনীর অনেক যানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১৯৭০ এর ভোলা ঘূর্ণিঝড়ের পর সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছিল। তারপরও ১৯৯১ এর সেই দুর্যোগ এতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, সেসময় অনেকেই ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা বুঝতে পারে নি। তাই সাইক্লোন সেন্টারে যায় নি।
তবে নব্বইয়ের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর থেকে এখন পর্যন্ত দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা ও প্রস্তুতির অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এ ব্যাপারে সুনাম অর্জন করেছে বাংলাদেশ। সাইক্লোন সেন্টার, বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করার কাজও অনেক দূর এগিয়েছে। তবে দুর্যোগের পর ত্রাণের সমন্বয়, বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবিকা, নতুন কর্মসংস্থান, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারলে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে।
সারাবাংলা/এসএসএস