Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে আসছে ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট

গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ মে ২০২১ ২৩:২৬

ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংকট পরবর্তী বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকে মাথায় রেখেই প্রণয়ন করা হচ্ছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫১তম এই বাজেটের আকার ছাড়িয়ে যাচ্ছে ৬ লাখ কোটি টাকার অঙ্ক। এটিই হতে যাচ্ছে দেশের ইতিহাসের বৃহত্তম বাজেট। আগামী ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করবেন আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের তৃতীয় এই বাজেট।

আগামী বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করে বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হচ্ছে ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে নতুন বাজেটের আকার বর্তমান বাজেটের তুলনায় হতে যাচ্ছে ৩৪ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক সুরক্ষার মতো খাতগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই বাজেট নিয়ে বলেছেন, আগামী বাজেটের লক্ষ্য আমাদের ডোমেস্টিক ইকোনমিকে (দেশজ অর্থনীতি) আরও সমৃদ্ধ করা। আমরা এই কাজগুলো করতে পারলে সবার হা-হুতাশ কমে যাবে, সবার কাছে টাকা-পয়সা থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে অন্যতম লক্ষ্য রাজস্ব আদায়। তবে রাজস্ব আদায় করতে গিয়ে যেন অন্য কোনো বিষয় মুখোমুখি চলে না আসে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে। সার্বিকভাবে আমরা ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ডোমেস্টিক ইন্ডাস্ট্রিকে আরও সমৃদ্ধ করতে চাই। এটি বিকশিত হলে আমাদের রেভিনিউ জেনারেশন সহজলভ্য হবে। এতে একদিকে যেমন রাজস্ব সংগ্রহ বাড়বে, অন্যদিকে কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।

বিজ্ঞাপন

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। সবকিছু ঠিকটাক থাকলে আগামী ৩ জুন জাতীয় সংসদে দেশের ৫১তম বাজেট এই বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী। এবারের বাজেটে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক সুরক্ষা, কর্মসংস্থান, খাদ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।

করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠবে— এমন আশা নিয়ে এবার ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট রাজস্ব আদায়ের হার জিডিপির প্রায় ১১ দশমিক ২। এর মধ্যে কর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। এটি মোট জিডিপির ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। বাজেটের মধ্যে আয়-ব্যয়ের হিসাবে ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ১৩ হাজার ৮০২ কোটি টাকা।

সূত্র জানায়, আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপির) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। আগামী বাজেটে করোনাভাইরাস পরবর্তী অর্থনীতি মোকাবিলায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আগামী বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল রাখা হচ্ছে। এছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আকারও বাড়ানো হচ্ছে। এই খাতে বরাদ্দ থাকছে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এছাড়াও আগামী বাজেটে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোসহ এসএমই খাতেও অর্থায়ন বাড়ানো হচ্ছে।

জানা গেছে, আগামী বাজেটে প্রবৃদ্ধি ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। এর আগে, চলতি অর্থবছরের শুরুতে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হলেও সেটি সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। চলতি অর্থবছরের মতো আগামী বাজেটেও মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে করোনার কারণে বেকার হওয়া লাখো মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নিয়েও থাকছে বিশেষ দিক নির্দেশনা। করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঝুঁকি মোকাবিলায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও রাখা হবে।

সারাবাংলা/জিএস/এএম

২০২১-২২ অর্থবছর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বাজেট ২০২১-২২

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর