মামুনুলকাণ্ডের পর আ.লীগ নেতা খুন: বিএনপি নেতা গ্রেফতার
৩ মে ২০২১ ২০:২৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকে খুনের মামলার প্রধান আসামি ইউনুছ মণিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রিসোর্টে কথিত স্ত্রীসহ মামুনুল হক অবরুদ্ধ হওয়ার পর বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামের একদল নেতাকর্মী গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে খুন করে। গ্রেফতার ইউনুছ মণি মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
সোমবার (৩ মে) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার শিলক ইউনিয়নের নটুয়ার টিলা পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ইউনুছকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্গম পাহাড়ি পথ ধরে পালানোর সময় ধাওয়া করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতার ইউনুছ মণি (৫০) রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা সেনবাড়ি এলাকার মৃত নূর হোসেনের ছেলে। তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাকে খুনের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর প্রধান আসামি ইউনুছ মণি এলাকা থেকে পালিয়ে যান। আমাদের কাছে তথ্য ছিল, তিনি বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ে ক্রমাগত অবস্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে আছেন। সোমবার একটি স্পটে তার অবস্থানের খবর পেয়ে আমরা অভিযান যাই। পাহাড়ি পথ ধরে পালানোর সময় আমরা তাকে ধাওয়া করে গ্রেফতার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইউনুছ গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া এবং আওয়ামী লীগ নেতাকে খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।’
নিহত মো. মুহিবুল্লাহ (৪৬) রাঙ্গুনিয়ার কোদালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে কথিত স্ত্রীসহ হেফাজতের তখনকার যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক অবরুদ্ধ হন। এ ঘটনা জানাজানির পর রাঙ্গুনিয়ার কোদালা আজিজিয়া মাদরাসার সামনে থেকে মামুনুলের সমর্থনে মিছিল বের হয়। পুলিশের ভাষ্য, ইউনুস মণির নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতের নেতাকর্মীদের মিছিল থেকে কোদালা ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া এলাকায় মুহিবুল্লাহসহ তিন জনের ওপর হামলা হয়। বাকি দু’জন হলেন— ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলদার আজম লিটন।
ওই সময় মুহিবুল্লাহকে এলোপাতাড়ি নৃশংসভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুহিবুল্লাহ ৭ এপ্রিল মারা যান। এ ঘটনায় আবদুল জব্বার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন, যেন ইউনুছকে প্রধান আসামি করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়, তাতেও ইউনুছ আসামি হিসেবে আছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর নির্বাচনি এলাকায় রাঙ্গুনিয়ায় তার অনুগত একসময়ের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ইউনুছ মণি। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সরকারি কাজে বাধাদান, হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাঙ্গুনিয়া থানায় পাঁচটি মামলা আছে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর