Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাস-বিমান চললে লঞ্চ কেন নয়— প্রশ্ন মালিকদের

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ মে ২০২১ ২২:২৯

ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে সরকারি কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই খুলে দেওয়া হয়েছে শপিংমল, দোকানপাট। আগামী ৬ মে থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে চলবে গণপরিবহনও। এমনকি বন্ধ নেই বিমানও। শুধু বন্ধ থাকছে ট্রেন ও লঞ্চ। সোমবার (৩ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠক অভ্যান্তরীণ রুটে গণপরিবহন চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত এসেছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে মনক্ষুন্ন লঞ্চ মালিকরা। তাদের প্রশ্ন, ‘লঞ্চ চলবে না কেন? আমরাও তো গণপরিবহনের মধ্যে পড়ি।’ তাই সরকারের সব শর্ত মেনেই লঞ্চ চালানোর অনুমতি চান তারা।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির পরিচালক ও সুরভী নেভিগেশনের নির্বাহী পরিচালক রিয়াজ-উল কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘কঠোর বিধিনিষেধে শিল্প-কারখানা চলছে। মার্কেট খুলে দেওয়া হয়েছে। আবার বাস চলাচলেও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু লঞ্চ বন্ধ রাখার মানে বুঝি না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদের আগে লঞ্চ চলাচলে অনুমতি চেয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানানো হয়েছে। হয়তো ৫ মে (বুধবার) এ নিয়ে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হতে পারে।’

নৌ-পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লঞ্চ চালাতে নানাধরনের শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। লঞ্চের মাস্টার থেকে লস্কর পর্যন্ত প্রতিটি পদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। লঞ্চের কর্মচারীদের বেতনের পাশাপাশি থাকা-খাওয়ার সুযোগ মালিকপক্ষ দিয়ে থাকে। কর্মচারীরা থাকার জন্য লঞ্চের একটি কেবিন পায়। এখন করোনাকাল হলেও তারা লঞ্চেই রয়েছে। ফলে তাদের বেতনও দিতে হচ্ছে লঞ্চ মালিকদের।

এ প্রসঙ্গে এমভি অ্যাডভেঞ্চার লঞ্চ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নিজাম উদ্দীন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘অন্যান্য পরিবহন থেকে আলাদা লঞ্চ। লঞ্চ এমন একটা পরিবহন যেখানে চলাচল করলেও লোক দরকার, না করলেও দরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানাধরনের মেইনটেনেন্সের জন্য সার্বক্ষণিক লোক থাকতে হবে। এখন করোনাকালে ইনকাম নেই। কিন্তু সকল স্টাফদের বসিয়েই বেতন দিতে হচ্ছে। গত বছরের বিশাল ধাক্কা কাটিয়ে না উঠতেই আবার লোকসানে বসে গেলাম।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই, আমাদেরও লঞ্চ চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক। কথা দিচ্ছি স্বাস্থ্যবিধি এবং সবধরনের শর্ত মেনে লঞ্চ পরিচালনা করব।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লঞ্চ মালিকদের একটি চিঠি মন্ত্রণালয়ে এসেছে। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বরাবরে পাঠানো চিঠিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্ত সাপেক্ষেই লঞ্চ পরিচালনায় অনুমতি পেতে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।

এ প্রসঙ্গে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে একাধিকাবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিগগিরই লঞ্চ মালিকদের নিয়ে আলোচনায় বসা হবে। তবে কবে কখন আলোচনা বসব তা মঙ্গলবার (৪ মে) তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।’

রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের অনেক পুরনো বাহন লঞ্চ। এই ব্যবসার উদ্যোক্তারা জানান, ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চলে। তবে সবচেয়ে বড় লঞ্চগুলো চলে ঢাকা-বরিশাল রুটে। সব মিলিয়ে ছোট বড় মিলিয়ে লঞ্চের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ হাজার। তার মধ্যে ফিটনেস নেই এমন লঞ্চের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। বর্তমানে সবধরনের লঞ্চই বন্ধ রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকে। হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে লঞ্চ মালিকদের। এবারও সেই আশঙ্কা করছেন তারা।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

চালু বন্‌ধ বাস বিমান লঞ্চ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর