আলোর মিছিলে ভয়াল কালোরাত স্মরণ
২৫ মার্চ ২০১৮ ২০:৩৭
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরীহ বাঙালির উপর পাকবাহিনীর চালানো নৃশংস আক্রমণের সেই কালোরাতের স্মরণে চট্টগ্রামে আলোর মিছিল করেছে উদীচী। জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই আলোর মিছিল করে সংগঠনটি।
রোববার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় নগরীর চেরাগি পাহাড় মোড় থেকে প্রজ্বলিত মোমবাতি হাতে নিয়ে মিছিল শুরু করেন উদীচীর শিল্পীসংগ্রামীরা। একাত্তরের রণাঙ্গণে যেসব সঙ্গীত বাঙালিতে যুদ্ধের উদ্দীপনা দিয়েছিল, সেই গানগুলোই ছিল শিল্পীসংগ্রামীদের কন্ঠে।
আলোর মিছিল চেরাগি পাহাড় মোড় থেকে জামালখান, প্রেসক্লাব হয়ে আবারও চেরাগিতে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল শুরুর আগে চেরাগি চত্বরে সমাবেশে প্রগতিশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংগঠকরা একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে নির্মম হত্যার শিকার নিরস্ত্র বাঙালিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত বাঙালি জাতির জীবনে বিভীষিকাময় রাত। সেই রাতে ৭ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ৩ হাজার মানুষ।বাঙালিদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট লুট করা হল। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একটি সুসংগঠিত বাহিনীর নিরস্ত্র জনতার উপর চালানো এই ধরনের বর্বরতা, নৃশংসতা ইতিহাসে বিরল।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকশা অনুযায়ী সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একদিকে তারা হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছিল, অন্যদিকে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেফতার করে। পাকিস্তানিরা ভেবেছিল নির্যাতন-নিপীড়ন, ধরপাকড়ের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়া যাবে। কিন্তু বাঙালি ৯ মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে।
কবি কামরুল হাসান বাদল বলেন, সরকার ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই দিনটির যাতে আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি আসে সে জন্য বাংলাদেশের প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল সংগঠনকে নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে।
উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা শীলা দাশগুপ্তার সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এবং গণজাগরণ মঞ্চ, চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ডা. চন্দন দাশ, সাংস্কৃতিক সংগঠক দেওয়ান মাকসুদ, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আতিক রিয়াদ এবং সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রীতম দাশ।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই