করোনা ঝুঁকি সত্ত্বেও তিল ধারণের ঠাঁই নেই বরিশালের মার্কেটে
৯ মে ২০২১ ১৮:২৬
বরিশাল: করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই বরিশালে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কাই করছেন না অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতারা। মাস্ক পরলেও কেউ কেউ রেখেছেন থুতনিতে। ক্রেতাদের অধিকাংশ দোকানিদের দেওয়া হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন না। একেবারেই মানছেন না শারীরিক দূরত্ব। শনিবার (৮ মে) সন্ধ্যার পর ও রোববার (৯ মে) সকালে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের সব চেষ্টাই করছেন তারা। কিন্তু কেউ শুনছেন আবার কেউ শুনছেন না তাদের কথা। এ ক্ষেত্রে নিরুপায় বিক্রেতারা।
এদিকে ঈদ বাজারের ভিড় সামলাতে না পড়লেও সবাইকে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। নিজের স্বার্থেই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।
ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের শর্তে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু ক্রেতার ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি উবে গেছে। সবচেয়ে বেশি ভিড় হচ্ছে নগরীর চকবাজার, কাঠপট্টি, হেমায়েত উদ্দিন রোডসহ সদর রোডের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শপিংমলগুলোতে। গরীবের ঈদ বাজার হিসেবে পরিচিত হাজী মহসিন হকার্স মাকেট, সিটি হকার্স মার্কেট এবং জেলা পরিষদ পুকুর পাড়ের খোলা উন্মুক্ত স্থানেও প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও রাত ১২টা, এমনকি একটা দেড়টা পর্যন্তও দোকান খোলা রাখা হচ্ছে। বাজারে ক্রেতাদের একাংশ মাস্ক ব্যবহার করলেও অনেকেই মাস্কবিহীন ঘোরাফেরা করছেন। এমনকি নাবালক শিশুদের নিয়েও ঈদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।
ক্রেতাদের ভিড়ে শারীরিক দূরত্ব এখন সরকারের কাগুজে আদেশে পরিণত হয়েছে। অবহেলা আর তাচ্ছিল্যের কারণে ঈদ বাজার থেকে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে ধরে নিয়েই কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। নিজেরা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করলেও সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিৎ বলে মনে করেন তারা। আগের বছরের চেয়ে এবারের ঈদের বাজারে সকল পণ্যের অতিরিক্ত দাম রাখার অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
নগরীর চকবাজারের অভিজাত শাড়ি প্রতিষ্ঠান ময়ুরীর মালিক মো. হানিফ শেখ জানান, করোনা সংক্রমণের ভয় তাদেরও আছে। এ জন্য মাস্ক ছাড়া কাউকে দোকানে ঢুকতে দিচ্ছেন না তারা। দোকানের সামনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কেউ হাত ধোয়ায় আগ্রহ দেখাচ্ছে না। শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করতে বললেও অনেকে শুনছেন না। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার অনুরোধ কেউ কেউ ভালোভাবে নিলেও অনেকে বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। তবে বলার কাজ বলে যাচ্ছেন তারা।
ঈদ বাজারে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত ফারাবী বলেন, ঈদ বাজারে ভিড় সামলানো যাচ্ছে না। তবে সবাই যাতে অন্তত মাস্ক ব্যবহার করে সেই চেষ্টা করছেন তারা। নিয়মের ব্যতয় হলে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
সারাবাংলা/এনএস