Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খাগড়াছড়িতে মাদরাসা ভবন নির্মাণে অনিয়ম, কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১০ মে ২০২১ ২১:৩৭

খাগড়াছড়ি: জেলার দীঘিনালা উপজেলার রশিক নগর দাখিল মাদরাসার বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট, পাথর, স্বল্প সিমেন্ট, বেশি বালু, বালুর পরিবর্তে মাটির ব্যবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে খাগড়াছড়ি শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদফতর।

খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রশিকনগর দাখিল মাদরাসার জন্য ৪ তলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ৩ কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনুস ব্রাদার্স।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রথম থেকেই দরপত্রে উল্লেখিত নির্দেশনা অনুসরণ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ভবনের নির্মাণ কাজ ২০১৯ অর্থবছরে শুরু এবং ২০২০ অর্থবছরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও তা মানেনি মেসার্স ইউনুস ব্রাদাস। নির্ধারিত সময়ে দরপত্র অনুযায়ী অর্ধক কাজও শেষ হয়নি। তাছাড়া কাগজে-কলমে কাজটি ইউনুছ ব্রাদার্সের নামে হলেও কাজ পরিচালনা করছেন উপ-ঠিকাদার মো. আব্দুল কাইয়ুম।

দরপত্রের শর্তমতে ঠিকাদার ১নং ইট ব্যবহার করেননি, ১নং ইটের কংকর ব্যবহার করেননি, সিমেন্ট কম-বালু বেশি দিয়েছেন, গার্ড ওয়াল দিয়ে গর্তগুলো বালুদিয়ে ভরাট করার কথা থাকলেও তা মাটি দিয়ে ভরাট করেছেন ঠিকাদার। এইভাবে ভবন নির্মাণ করা হলে যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা থাকবেই।

নির্মাণ মিস্ত্রী মো. আফজাল হোসেন জানান উপ-ঠিকাদার আবদুল কাইয়ুম তাকে ভবনটি নির্মাণ করার জন্য প্রধান মিস্ত্রির দায়িত্ব দেন। ভবনের প্রথমতলার ছাদ বৃষ্টির মধ্যে ঢালাই দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দরপত্রে সিমেন্ট ও বালুর অনুপাত ১:৪ দেওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার তাকে ১:৮ হারে সিমেন্ট ও বালু দিতে বলেন। এ নিয়ে ঠিকাদার কাইয়ুমের সঙ্গে তার বাগ-বিতণ্ডাও হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘ঠিকাদার আবদুল কাইয়ুম ১ হাজার বস্তা সিমেন্ট বাঁচিয়ে দিতে বললে, তিনি তা অস্বীকার জানালে ঠিকাদার আমাকে বাদ দিয়ে আরও একজনকে নিয়োগ দিয়েছে। যদি এইভাবে কাজ শেষ হয়, তাহলে একসময় এই ভবনের নিচে পড়ে আমাদের সন্তানদের মরতে হবে। এই বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও জানিয়েছি।’

কাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে যান দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে নিম্নমানের কাজসহ ঠিকাদারের নানা অনিয়মের সত্যতা পেয়ে বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

উপ-ঠিকাদার আবদুল কাইয়ুম বলেন, “সারা পৃথিবীটা চলে ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ ফর্মুলায়। কিছু সমস্যা থাকতেই পারে। তার জন্য কাজ বন্ধ করা যুক্তিযুক্ত নয়। যেখানে আমি লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছি, সেখানে দুই/তিনজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করা অসম্ভব হবে না।”

খাগড়াছড়ির শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসিফুর রহমান বলেন, ‘মাদরাসার ভবন নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে আপাতত নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছি। এই বিষয়ে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।’

সারাবাংলা/এমও

কাজ বন্ধ খাগড়াছড়ি মাদরাসা ভবন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর