নানা সমস্যায় জর্জরিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র
১১ মে ২০২১ ০৮:৩৯
ভৈরব: ভৈরবে নানা সমস্যায় জর্জড়িত শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র। লোকবল সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের ভেতরের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে ফার্মাসিস্ট ও পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়া পদটি খালি রয়েছে। এছাড়া মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সেবা দানের কথা থাকলেও ঠিকমতো তারা মাঠে সেবা দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, ১৯৯০ সালে শিবপুর ইউনিয়নে এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু হয়। শুরু থেকেই ইউনিয়নবাসিদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। সেবা কেন্দ্রটিতে নরমাল ডেলিভারি, প্রসূতি সেবা, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্যসেবা, সাধারণ স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা সেবা দেওয়া হতো।
বর্তমানে একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা এবং উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার এবং একজন নৈশপ্রহরী কাম অফিস সহায়ক দিয়ে চলছে সেবা কার্যক্রম। এর মধ্যে মেডিক্যাল অফিসার হাবিবুর রহমান অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সাদেকপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। যার ফলে তিনি নিয়মিত এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসেন না ।
এছাড়া মাঠপর্যায়ে ৪ জন স্বাস্থ্যসেবি থাকলেও তারা ঠিক মতো মাঠে যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে গর্ভবতী মাসহ বিভিন্ন রোগীরা স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু তাই নয় মাঠপর্যায়ে সেবা গ্রহীতাদের বিনামূল্যে বরাদ্দকৃত ইনজেকশন ও জন্ম নিয়ন্ত্রণের বড়ি টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয় বলেও স্বাস্থ্যকর্মী মাফফুজা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে মেডিক্যাল অফিসার, স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা, আয়াসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাউকে পাওয়া যায়নি। সেবা নিতে আসা রহিমা বেগম, সালেহা বেগমসহ অনেকেই জানান, আগে বাড়িতে বসে তারা স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন পরামর্শ পেতেন। এখন আর স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেন না। তাই বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছেন।
এখানে এসেও তারা কাউকে পাননি। পরে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা শাহিদা আক্তারের মোবাইলে ফোন দিলে জানান, মাসিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য উপজেলা পরিবার-পরিকলল্পনা অফিসে আছেন তিনি ।
উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার হাবিবুর রহমানও একই কথা বলেন। তিনি আরও জানান যে, তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সাদেকপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এ কারণে প্রতিদিন এখানে ডিউটি করতে পারেন না।
উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাফি উদ্দিন স্বাস্থ্যকর্মী মাফফুজা আক্তারের অনিয়ম-দুর্নীতির কথা স্বীকার করে বলেন, তাকে ইতিপূর্বে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া ফার্মাসিস্ট ও পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়া পদে লোকবল না থাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানান।
এছাড়া ভবন মেরামত ও বাউন্ডারি দেয়াল নিমার্ণের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল কল্যাণ অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২০ সালে ১৫ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত ৫ মাসেও কাজ শুরু করেনি। কবে নাগাদ বা কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে তাও তিনি জানেন না বলেও জানান।
সারাবাংলা/এমও