করোনার ধাক্কা গণপূর্তের ৩ প্রকল্পে, বাড়ছে মেয়াদ
১১ মে ২০২১ ০৮:৫৫
ঢাকা: করোনা (কোভিড-১৯) মহামারিতে বিপর্যস্ত পৃথিবী। এর একেকটি ঢেউয়ে অনেক দেশ লকডাউন দিতে বাধ্য হয়েছে। সেজন্য এখনও পুরোপুরি সচল হয়নি অর্থনীতির চাকা। পৃথিবীর অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও লকডাউন ছিল। যার প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিসহ অবকাঠামো উন্নয়নে। এমনকি করোনার কারণে অনেক প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না। এমনই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। নির্ধারিত সময়ে এগুলো শেষ না হওয়ায় মেয়াদ বাড়ছে। প্রকল্পগুলো হলো- ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া ও বিভিন্ন হলের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ও পরিবর্ধন কাজ’, ‘ঢাকাস্থ রমনা পার্কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং রমনা লেকসহ সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ এবং ‘বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট বার লাইব্রেরি ভবন, এনেক্স ভবন এবং অডিটোরিয়াম নবায়নসহ আনুষঙ্গিক কাজ’।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে শেষ জন্য নির্ধারিত প্রকল্প তালিকায় এসব প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্পগুলো শেষ করা যাচ্ছে না বলে গত ২৮ এপ্রিল পরিকল্পনা কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, জুন মাসের মধ্যে প্রকল্প তিনটি শেষ হচ্ছে না। এসব প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আগে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের পূর্বানুমোদন বা পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এর আগে গত ২৪ মার্চ গণপুর্ত অধিদফতর থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে চলতি অর্থবছর এ তিন প্রকল্প সমাপ্ত না হওয়ার কারণ ব্যাখাসহ আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ জানানো হয়।
গণপূর্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সমন্বয়) শহিদুল ইসলামের সই করা ব্যাখায় বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া ও বিভিন্ন হলের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ও পরিবর্ধন কাজ’ শীর্ষক প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে না। এর করার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিরাপত্তাজনিত কারণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাসময়ে কাজের অনুমতি না পাওয়ায় বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থা থেকে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ক্লিয়ারনেন্স পেতে দেরি হওয়ায় কাজ শুরুতে বিলম্ব হয়। অতিমারি কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রকোপের কারণে দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালীন প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। ফলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে।
এছাড়া ‘ঢাকাস্থ রমনা পার্কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং রমনা লেকসহ সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটিরর মাধ্যমে স্থাপত্য অধিদফতর প্রণীত স্থাপত্য নকশা অনুমোদন না পাওয়ার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে দেরি হয়। অতিমারি কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রকোপের কারণে দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালীন প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। শিশু কর্নার এবং উন্মুক্ত কফি কর্নারসহ রেস্টুরেন্টের স্থাপত্য নকশা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, এমপির সভাপতিত্বে গত বছরের ১২ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যান্টিলিডার ডেকের দৈর্ঘ্য পুনঃবৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়। ফলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে।
‘বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট বার লাইব্রেরি ভবন, এনেক্স ভবন এবং অডিটরিয়াম নবায়নসহ আনুষঙ্গিক কাজ’ শীর্ষক প্রকল্পটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, অতিমারি কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রকোপের কারণে দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালীন প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। ভার্চুয়াল কোট সার্বক্ষণিক চালু থাকায় দিনে কাজ করার অনুমতি পাওয়া যায় না। শুক্র ও শনিবার এবং সরকারি বন্ধের দিন বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সিভিল কাজ করা সম্ভব হয় না। সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় নতুন টয়লেট ও রিজার্ভারের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সেজন্য প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম