‘ঈদে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করা সুইসাইড সিদ্ধান্তের শামিল’
১১ মে ২০২১ ০৯:০৬
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, লকডাউনের সামান্য শিথিলতার সুযোগ নিয়ে স্বাস্থ্যবিধির কোনোরকম তোয়াক্কা না করে ঈদে ঘরমুখো মানুষ দলবেঁধে গাদাগাদি করে যেভাবে ফেরি পারাপারসহ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করছে তা একেবারে সুইসাইড সিদ্ধান্তের শামিল।
সোমবার (১০ মে) দুপুরে ‘ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় করণীয়’ বিষয় নিয়ে দেশের চারটি সীমান্ত এলাকার বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল এক মমতবিনিময় সভায় যুক্ত হয়ে এ মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘শহরাঞ্চলেও মানুষ এখন বেপরোয়া চলাফেরা করছে। ঢাকাসহ দেশের বড় বড় বিভাগীয় শহরে শপিংমলসহ বিভিন্ন যানবাহনে গাদাগাদি করে মানুষ চলাফেরা করছে। এভাবে চলতে দিলে ঈদের পর দেশে ভারত, নেপালের মতো ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে প্রতিটি সীমান্ত এলাকার দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে কাজ করতে হবে। বর্ডার এলাকার ভারত যাতায়াতকারী ব্যক্তির পরিবারহ সব মানুষকে দ্রুত ও বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্টটি এখন নেপালে ছড়িয়ে গিয়ে সেখানে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে। এই ভ্যারিয়েন্ট এখন আমাদের দেশেও চলে এসেছে। এরকম ক্রিটিক্যাল সময়ে এই ভাইরাস দেহে নিয়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যদি গ্রামে চলে যায়, তাহলে গ্রামে থাকা পরিবার পরিজনসহ গ্রামবাসী গণহারে আক্রান্ত হতে পারে।’
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার ৪টি বিভাগ রংপুর, সিলেট, খুলনা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, বর্ডার এলাকা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে করণীয় বিষয়াদি নিয়ে সার্বিক নির্দেশনা দেন ও তাদের মতামত শোনেন।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১৫ দিন বর্ডার এলাকায় কতজন মানুষ ভারতে যাতায়াত করেছে তার তালিকা জানতে চান। মন্ত্রী বর্ডার এলাকায় ব্যাপক হারে কোভিড পরীক্ষা চালানোর নির্দেশনা দেন। ভারত যাতায়াতকারীদের পরিবারের সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে বলেন এবং বর্ডার এলাকায় যেকোনো ধরনের যানবাহন যেন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় মুভমেন্ট করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করার জরুরি নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জানান, খুলনা বিভাগীয় এলাকায় বর্তমানে ২ হাজার ৭০০ জন ভারত যাতায়াতকারী ব্যক্তি হোম কোয়ারেনটাইনে আছেন। তাদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া ভারত থেকে বন্দর দিয়ে প্রবেশ করা ট্রাক ড্রাইভার, হেলপারদের কোনোভাবেই মুভমেন্ট করতে দেওয়া হচ্ছে না। কঠোরভাবে তাদের আইসোলেশন ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হয়েছে।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশ থেকে ভারত যাতায়াতকারী ড্রাইভার-হেলপারদেরও কোয়ারেনটাইন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা, খুলনা, চট্টগ্রাম, রংপুর ও সিলেট বিভাগের রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তারা।
সারাবাংলা/এসবি/এমও
কোয়ারেনটাইন ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট স্বাস্থ্যবিধি স্বাস্থ্যমন্ত্রী