Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

টাকার নোটে করোনার উপস্থিতি

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১১ মে ২০২১ ০৯:৫০

ঢাকা: দেশে ১০, ২০ ও ১০০ টাকার নোটে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ২০২০ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা নোটে করোনার আরএনএ’র উপস্থিতি পায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) গবেষকরা। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে নমুনা সংগ্রহ করা হলেও এই সিকোয়েন্সিং তথ্য জিআইএসএইডে আপলোড করা হয় ১৮ অক্টোবর। সর্বশেষ ২৩ এপ্রিল টাকায় আরএনএ’র উপস্থিতি পাওয়ার তথ্য সাবমিট করা হয় যবিপ্রবির সিকোয়েন্সিং ল্যাব থেকে।

গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটা (জিআইএসএইড) জার্মান সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে করোনাভাইরাসের সবধরনের জিনোম সিকুয়েন্সের তথ্য জমা রাখা হয়। এখান থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩টি সিকোয়েন্স জমা পড়েছে টাকায় আরএনএ’র উপস্থিতি সংক্রান্ত। এর মাঝে অধিকাংশই যশোর জেলা থেকে সংগ্রহ করা নোট। ৫ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে এই সব নোট সংগ্রহ করা হয়।

৫ আগস্ট খুলনার ময়লাপোতা এলাকার একটি মুদি দোকান থেকে সংগ্রহ করা ১০ টাকার নোটে প্রথম করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়। ১৬ আগস্ট যশোরের দড়তানা এলাকার একটি স্টেশনারি দোকান থেকে সংগ্রহ করা ১০০ টাকার নোটেও পাওয়া যায় করোনার উপস্থিতি। এইগুলোর ডাটা জিআইএসএইডে সাবমিট করা হয় ১৮ অক্টোবর। পরে ২৩ আগস্ট যশোরের রেস্টুরেন্ট ও গণপরিবহন থেকে সংগ্রহ করা তিনটি ১০ টাকার নোটে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়। এরমধ্যে একটির ডাটা জিআইএসএইডে ১৮ অক্টোবর সাবমিট করা হলেও অন্য দুইটির ক্ষেত্রে ডাটা সাবমিট করা হয় ২০২১ সালের ৩ মার্চ ও ২৩ এপ্রিল।

একইভাবে খুলনার হেরাস মার্কেটের একটি ফার্মেসি থেকে সংগ্রহ করা ২০ টাকার নোটে, একই দিন একই ফার্মেসি থেকে সংগ্রহ করা একটি ১০০ টাকার নোটে এবং একটি মুদি দোকান থেকে সংগ্রহ করা ১০ টাকার নোটে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়। ২২ সেপ্টেম্বর যশোরের বিভিন্ন লোকাল ট্রান্সপোর্ট থেকে সংগ্রহ করা টাকার নোটেও করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব টাকার নোটে করোনার উপস্থিতি বিষয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ সারাবাংলাকে বলেন, রিকশাওয়ালাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাংক নোট সংগ্রহ করেছিলাম। একইসঙ্গে ব্যাংক থেকেও নতুন নোট নিয়েছিলাম। আমরা বিভিন্ন নোটে কোভিড আরএনএ’র উপস্থিতি পেয়েছি।

তিনি বলেন, টাকাতে সরাসরি কোভিডের উপস্থিতি আছে কিনা তা বলতে হলে গবেষণা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে কোভিড টাকা থেকে কতটুকু ছড়াতে পারে সে বিষয়েও আমাদের কোনো মন্তব্য নাই। যেহেতু ইদানিং বলা হচ্ছে যে বাতাস ছাড়া অন্য জায়গায় কম ছড়ায়, তারপরেও আমরা যা পেয়েছি তা একটা জার্নালে পাবলিশ করেছি। আমরা সাত শতাংশ ব্যাংক নোটে করোনার আরএনএ’র পজিটিভ উপস্থিতি পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আরেকটি বিষয় দেখেছি এ সময়ে। নতুন ব্যাংক নোটের চাইতে পুরাতন ব্যাংক নোটে ভাইরাস কম টিকে থাকে। তবে কতটা সংক্রমণ ছড়াতে পারে সে বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। আমরা শুধুমাত্র দেখিয়েছি যে টাকাতেও করোনার উপস্থিতি থাকতে পারে। ব্যাংকনোটে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ভাইরাসের এন-জিনের উপস্থিতি এবং ৮-১০ ঘণ্টা পর্যন্ত ওআরএফ জিনের স্থায়িত্ব শনাক্ত করতে পেরেছি আমরা।

সারাবাংলা/এসবি/এএম

করোনাভাইরাস টাকার নোট


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর