ধর্ষণের ‘দায় স্বীকার’ করে জাকারিয়া নোমানের জবানবন্দি
১৩ মে ২০২১ ১৬:৫৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়জী। পুলিশ জানিয়েছে, জবানবন্দিতে জাকারিয়া নোমান ফয়জী অভিযোগকারী নারীর সঙ্গে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক এবং তাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জয়ন্তী রাণী রায়ের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম জানিয়েছেন।
গত ৪ মে বিকেলে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থেকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের একটি দলে জাকারিয়া নোমান ফয়জীকে গ্রেফতার করে। হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলেন তিনি। গত ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের সহিংস তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
আরও পড়ুন-
- হেফাজত নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়জী রিমান্ডে
- হেফাজত নেতা জাকারিয়া নোমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণমামলা
- সহিংসতায় ইন্ধন: হেফাজত নেতা জাকারিয়া নোমান গ্রেফতার
- হেফাজতের তাণ্ডবের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড জাকারিয়া: পুলিশ
- আদালতে জবানবন্দি জাকারিয়ার, সহিংসতায় ‘সম্পৃক্ততার’ দায় স্বীকার
- অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত হেফাজত নেতা বললেন— মানুষেরই ভুল হয়
এরপর গত ৬ মে রাতে এক নারী বাদী হয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় জাকারিয়া নোমান ফয়জীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকের মাধ্যমে ওই নারীর সঙ্গে জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর পরিচয় হয়। মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে মেয়েটির সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ও পরবর্তী সময়ে বিয়ের প্রলোভন দেখান। জাকারিয়া নোমান ফয়জীকে বিশ্বাস করে মেয়েটি নগরী থেকে হাটহাজারীতে তার কাছে চলে যান। তাকে ২০১৯ সালের নভেম্বরে পৌর সদরে কনক বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় বাসা ভাড়া করে রাখা হয়। সেখানে একবছর ধরে তাকে ধর্ষণ করেন জাকারিয়া নোমান ফয়জী। পরে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন বাসায় ও হোটেলে নিয়েও তাকে ধর্ষণ করেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবদুল্লাহ আল মাসুম সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাকারিয়া নোমান ফয়জীকে আমরা দুই দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি। এর আগেও একটি মামলায় হাটহাজারী সহিংসতায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন। সর্বশেষ আজ (বৃহস্পতিবার) তিনি ধর্ষণের মামলায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই নারী তার বিরুদ্ধে বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ও ধর্ষণের যে অভিযোগ করেছেন, জাকারিয়া নোমান ফয়জী জবানবন্দিতে সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন।’
জাকারিয়া নোমান ফয়জীকে গ্রেফতারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক জানিয়েছিলেন, জাকারিয়া নোমান ফয়জীর একাধিক নারীর সঙ্গে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ কথা শিকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হেফাজতের লক্ষ্য ও তার বেশভূষার সঙ্গে এমন অনৈতিক আচরণ সাংঘর্ষিক কি না। এর জবাবে জাকারিয়া বলেছিলেন, মানুষ মাত্রই ভুল করে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর