‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র হচ্ছে’
১৩ মে ২০২১ ১৭:২৫
ঢাকা: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটার ঘটনাকে ঘিরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে যে মাস্টারপ্ল্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে, এতে উদ্যানের কিছু গাছ কাটা হতে পারে। কিন্তু সরকারবিরোধী শক্তিরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের পার্শ্ববর্তী নির্বাচনি অফিসে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির উদ্যোগে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
করোনা মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন এস এম কামাল। তবে এ পরিস্থিতিতেও দেশবিরোধী শক্তি ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি-জামায়াতসহ অতি বাম ও অতি ডানপন্থিদের ইঙ্গিত করে এস এম কামাল বলেন, সেই অপশক্তি আজ আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা মানে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা মানে দেশের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই মির্জা ফখরুলরা জামায়াতের সঙ্গে মিলে হেফাজতে ইসলাম নামে একটি সংগঠনকে দাঁড় করিয়েছে। আসলে এরা ইসলামের হেফাজতকারী না। এরা বাবুনগরী-মামুনুল হকদের সামনে রেখে তাণ্ডব চালানোর চেষ্টা করেছে। আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছে। ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চেয়েছে। আমাদের অস্তিত্ব বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের প্রতীক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর হামলা করে আমাদের হৃদয়ে আঘাত করেছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে মাস্টারপ্ল্যান নিয়েছেন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। সেই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দুয়েকটি গাছ কাটা হতে পারে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন এক হাজার নতুন গাছ রোপণ করার জন্য। জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এক কোটিরও বেশি গাছ লাগানো জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের ও সরকারিভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে শেখ হাসিনার নির্দেশে এক কোটিরও বেশি গাছ রোপণ হয়েছে দাবি করেন তিনি।
এস এম কামাল বলেন, আজ নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই পরিবেশবাদীরা তো সেদিন কথা বলেন নাই যেদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ১৫ একর জমি দখল করে জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক করলেন। সেদিন তো বলেন নাই যে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। যেদিন ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকানোর অবরোধের নামে শত শত গাছ কেটে রাস্তায় ব্যারিকেড করা হয়েছে, সেদিন কিন্তু পরিবেশবাদীরা কোনো কথা বলেন নাই!
‘কিন্তু আজ তারা নতুন করে কথা বলছেন। কারণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুকে ১৯৬৯ সালের ২৩ ফ্রেব্রুয়ারি শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেছিল বাংলার জনগণ। এই সোহরওয়ার্দী উদ্যানে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির সামনে স্বাধীনতার চূড়ার দিক-নির্দেশনা ঘোষণা করেছিলেন। এই সোহরায়ার্দী উদ্যানে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম এসেছিলেন জনতার কাছে ১৯৭১ সালের ১০ জানুয়ারি। সেই জায়গাকে যখন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে, তখন দুয়েকটি গাছ কাটতে গেলে তার বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে। সেইখানে কোনো খাবারের দোকান করা হয়নি, সেইখানে কোনো রুটির দোকান, ভাতের দোকান করা হয়নি,’— বলেন এস এম কামাল হোসেন।
ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়ে এস এম কামাল বলেন, আমাদের নেত্রী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার পথকে মসৃণ করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসসহ উপকমিটির সদস্যরা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর