Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে রক্ষা পেল দুর্লভ প্রজাতির বনরুই

লোকাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ মে ২০২১ ২১:০৭

কমলগঞ্জ: মঙ্গলবার (১১ মে) রাতে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা খাসীয়া পুঞ্জি এলাকা থেকে বন্যপ্রানী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেবের সঙ্গে মেঘা নামের জনৈক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে জানান- তার কাছে একটি বনরুই রয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই সেই মুঠোফন বন্ধ হয়ে যায়। কোনোভাবেই তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। এর পর সজল দেব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

বিজ্ঞাপন

বনরুই অত্যন্ত দুর্লভ এবং বাংলাদেশ বন্য আইনে সংরক্ষিত প্রাণী। কোনোভাবে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়লে উদ্ধার করা কঠিন হয়ে যায়। পরে বুধবার (১২ মে) সকালে টিম SEW-এর সোহেল স্যাম পাপ্পুর সঙ্গে সজল দেব যোগাযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে তারা তৎপর হয়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রে তারা একটু ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। যেহেতু পাত্রখোলা এবং কুরমা পাশাপাশি দুইটি পুঞ্জি সেহেতু পাত্রখোলা গারো লাইনগুলোতে তাদের সহকর্মীদের মাঝে খবর পৌঁছে দেন এবং এক সময় তারা নিশ্চিত হন মেঘা নামের কেউ নেই ওই এলাকায়।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় ধাপে তারা সেই মোবাইল ফোনের নম্বর ছড়িয়ে দেন দুই এলাকায় তাদের সহকর্মী ও দায়িত্তশীল ব্যক্তিদের মাঝে এবং নম্বরটি ব্যবহারকারীর পরিচয় ও লোকেশন ট্রেস করার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায় জনৈক ব্যক্তির নাম মেঘা নয় জুয়েল। লোকেশনও ট্রেস হয়ে যায়। সে কুলাউড়া উপজেলার জাপান পুঞ্জির বাসিন্দা। তখন টিম SEW-এর অনুরোধে পাত্রখোলা পুঞ্জির সেকেন্ডম্যান এলিসন জাপান পুঞ্জিতে খবর পাঠান এবং তার মোবাইল চালু করতে নির্দেশ দেন।

সঙ্গে সঙ্গে টিম SEW যোগাযোগ করে। ওপর প্রান্ত থেকে তখন জানানো হয় বনরুইটি গত রাতেই খাঁচা থেকে পালিয়ে গেছে৷ তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় টিম SEW তাকে চাপ প্রয়োগ করে। ততক্ষণে টিম SEW-এর খোকন থউনাউজাম (ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার), সোহেল স্যাম পাপ্পু (ওয়াইল্ড লাইফ রেস্কিউয়ার), কাজল হাজরা (ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার), নিরঝর নিলয় (ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার) ঘটনা স্থলে রওনা দেন।

এর মধ্যেই DFO রেজাউল করিম সঙ্গেও যোগাযোগ করে টিম SEW. রেজাউল করিমের দিক নির্দেশনায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মেহেদি হাসান এবং মৌলভীবাজার সদর রেঞ্জ অফিসার গোলাম সরোয়ারের নেতৃত্বে বনবিভাগের ৬ জনের একটি দলও রওনা দেয় লোকেশনের উদ্দ্যেশে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব।

টিম SEW লোকেশনে পৌঁছায় বিকেল ৫ টার দিকে এবং বনরুই নিজেদের জিম্মায় নেয়। একইসঙ্গে পুঞ্জির বাসিন্দাদের সঙ্গে জীববৈচিত্র্য রক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক আলোচনা করে।

পরবর্তী সময়ে বনবিভাগের উপস্থিতে স্থানীয় বাসিন্দারা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা রাখার এবং যেকোনো বন্যপ্রাণী শিকার করা বা ধরা থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করেন। পুঞ্জির হেডম্যান শেখর চিরান এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সোহেল স্যাম পাপ্পু (ওয়াইল্ড লাইফ রেস্কিউয়ার) সারাবাংলাকে জানান- উদ্ধার হওয়া বনরুইটি বর্তমানে জানকিছড়ার বনবিভাগের রেস্কিউ সেন্টারে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

অভিযান বনরুই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর