Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লোকে লোকারণ্য পর্যটন স্পট, নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৫ মে ২০২১ ২২:১৫

মৌলভীবাজার: করোনা মহামারি রোধে সারাদেশে চলছে সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ। আর এই বিধিনিষেধের আওতায় রয়েছে চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারসহ দেশের সব পর্যটন স্পট। কিন্তু ঈদের পরদিন শনিবার (১৫ মে) হালকা বৃষ্টির মধ্যেও মৌলভীবাজার জেলার বেশিরভাগ দর্শনীয় স্থানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। যেসব জায়গায় নেই ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধির বালাই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নিয়ন্ত্রিত শ্রীমঙ্গল বদ্ধভূমি ৭১, মাধবপুর লেক, লাউয়াছড়া উদ্যানের সড়ক, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত ছাড়াও জেলার প্রায় সব চা বাগান এলাকায় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ঈদের দিন থেকেই মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ঘুরছেন অবাধে। এ সময় বেশিরভাগ পর্যটকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এমনকি তারা মানছে না স্বাস্থ্যবিধিও। একই অবস্থা ছিল দলই চা বাগানে এলাকায় বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ এলাকা, শমসেরনগর চা বাগান লেক, চা বাগান গলফ মাঠ, ফুলবাড়ি চা বাগানসহ বিভিন্ন বাগানের পাহাড়ি উঁচু নিচু প্লান্টেশনে।

বিজ্ঞাপন

মাধবপুর লেকের উদ্দেশে রওনা দিয়ে দেখা যায়, লেকে যাওয়ার আগে চা বাগানের প্রধান দুটি ফটকে নিরাপত্তারক্ষীরা পর্যটকদের ব্যবহৃত যানবাহন আটকানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কেউ কোনো বাধা মানছেন না। চা বাগান কারখানা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার ভেতরে তিনদিকের উঁচু পাহাড়ি টিলাবেষ্টিত লেকে পর্যটকরা দল বেঁধে যাতায়াত করছেন। লেক এলাকায় চা গাছ আচ্ছাদিত টিলায় উঠে ছবি তুলছেন। প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যটকের মুখেই ছিল না মাস্ক। মাধবপুর চা বাগান সূত্রে জানা যায়, কর্তৃপক্ষ উপচেপড়া পর্যটকদের কাছে অনেকটা অসহায় বোধ করছেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে এসেছেন শামসুর রহমান। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ঘরে আটক থেকে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলাম। তাছাড়া বাচ্চাদেরও চাপ ছিল। তাই বেড়াতে এসেছি।’

মিলন খান নামে এক ব্যাংককর্তাও স্বপরিবারে এসেছেন বেড়াতে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘চরম সংকট পার করছি আমরা। তবুও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যদিও বেশিরভাগ পর্যটকই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমাদের কঠিন দিন পার করতে হতে পারে।’

দেখা গেছে, নারী-পুরুষ ও শিশুরা ঈদের ছুটির আনন্দ উপভোগ করতে ব্যস্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পর্যটক জানান, দীর্ঘদিন তারা সন্তানদের নিয়ে অনেকটা গৃহবন্দী ছিলেন। ঈদের ছুটিতে সন্তানদের অনুরোধে বাধ্য হয়ে মাধবপুর লেকে বেড়াতে এসেছেন।

মাধবপুর লেকের প্রধান ফটকের গেটম্যান লক্ষী নারায়ণ সারাবাংলাকে জানান, সরকারিভাবে পর্যটকদের লেকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘নিষেধ করার পরেও দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের চেষ্টা করেও থামানো যায়নি। এত বেশি লোকসমাগম হয়েছে যে, আমরা অনেক চেষ্টা করেও তাদের প্রবেশ আটকাতে পারছি না।’

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকায় কড়া নিরাপত্তার কারণে কোনো পর্যটক প্রবেশ করেনি। যদিও কিছু সংখ্যক পর্যটককে ভিন্ন পন্থায় লাউয়াছড়ায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তবে অসংখ্য পর্যটক উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের আশপাশের বেশকিছু এলাকায় পরিবারসহ ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে। এসব পর্যটকই পরবর্তীতে মাধবপুর লেকসহ জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভিড় জমিয়েছে।’

এদিকে জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। যদিও পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে দর্শনীয় স্থানে ঢুকছেন পর্যটকরা। কোনো বাধাই পর্যটকদের ভিড়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

সারাবাংলা/পিটিএম

পর্যটন স্পট বালাই স্বাস্থ্যবিধি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর