Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দহীনভাবে যুক্ত হচ্ছে ৫৯৬ প্রকল্প

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৮ মে ২০২১ ০৮:৪৭

ঢাকা: নতুন প্রকল্প গ্রহণে ব্যাপক কড়াকড়ি করেছে পরিকল্পনা কমিশন। করোনা মহামারির মধ্যেই নির্ধারিত মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতেই এমন কড়াকড়ি আরোপ করেছে বলে জানা গেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৫৯৬টি উন্নয়ন প্রকল্প বরাদ্দহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। অথচ মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো থেকে প্রস্তাব এসেছিল ১ হাজার ২৯১টি প্রকল্পের। অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নতুন প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ফিসক্যাল স্পেসসহ অন্যান্য নিয়ম-কানুন না মানায় আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রোগ্রামিং কমিটি সভায় এই সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৮ মে) ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় এসব প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া নতুন প্রকল্পের প্রস্তাবগুলো অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের এডিপি প্রক্ষেপণ, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের এমটিবিএফ সিলিং, চলমান প্রকল্পের দায়, বাস্তবায়নকারী সংস্থার প্রশাসনিক ও কারিগরি সক্ষমতা ইত্যাদি পর্যালোচনা করেই আগামী এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।’

সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) উপস্থাপন করা হচ্ছে এনইসিতে। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৮৮ হাজার ২৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এডিপির এই আকার চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় ২০ হাজার ১৭৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বেশি। এছাড়া সংশোধিত এডিপির তুলনায় ২৭ হাজার ৬৮১ কোটি ১৪ লাখ টাকা বেশি।

এনইসি বৈঠকে জন্য তৈরি সার-সংক্ষেপে নতুন প্রকল্পের বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রকল্পের সুষ্ঠু অর্থায়নের জন্য মধ্যমেয়াদী বাজেট কাঠামোর আওতায় মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর জন্য নির্ধারিত প্রাক্কলন বা প্রক্ষেপণের মধ্যে সীমাবন্ধ থেকে প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন। অধিকাংশ মন্ত্রণালয় বা বিভাগ নতুন প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ফিসক্যাল স্পেস না থাকার পরও প্রকল্প গ্রহণ করায় চলমান প্রকল্পসহ নতুন প্রকল্পের অনুকূলে পরিকল্পনা অনুযায়ী বরাদ্দ নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। ফলে নির্ধারিত মেয়াদে প্রকল্প শেষ হয় না এবং জনগণের কাছে প্রকল্পের সুফল সঠিক সময়ে পৌঁছে না। ব্যবস্থাপনা ব্যয়সহ নানা কারণে সময় অতিক্রান্তের ফলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পায়। ভ্যালু ফর মানি নিশ্চিত হয় না। এছাড়া যথাযথ পরিবশ,অর্থনৈতিক ও কারিগরি সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প গ্রহণ করায় বাস্তবায়নে জটিলতার সৃষ্টি হয়। বারবার প্রকল্প সংশোধনের প্রয়োজন হয়। ব্যয় বাড়ে ও নির্ধারিত মেয়াদে শেষও হয় না। এ প্রেক্ষাপটে নতুন প্রকল্প সংখ্যা কম রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আগামী অর্থবছরের জন্য কয়েকটি নতুন প্রকল্প হচ্ছে— বর্ধিত ঢাকা শহরে পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন (২০২১ সালের জুলাই হতে ২০২৫); রায়ের বাজার এলাকায় পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প; পদ্মা (যশলদিয়াস্থ) পানি শোধনাগারের (ফেজ-১) পরিশোধিত পানি ঢাকা শহরে সরবরাহের লক্ষ্যে মেইন লাইন নির্মাণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প; চট্টগ্রাম ওয়াসার ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বাস্তবায়ন প্রকল্প; চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রধান অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প; মোহরা পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেইজ-২; ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় নিরাপদ পানি সরবরাহ ও এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্প; সারাদেশের ৩১টি পৌরসভায় নিরাপদ পানি সরবরাহ ও এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্প; খাগড়াছড়ি জেলার বাজারসমূহ ও নিকটবর্তী এলাকায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাকরণ প্রকল্প; জাতীয় গৃহায়ন কর্তপক্ষের ঢাকাস্থ লালমাটিয়া হাউজিং এস্টেটের নিউকলোনি এলাকায় খেলার মাঠের বেইজমেন্টে কারপার্কিং স্পেস নির্মাণ এবং মাঠের অভ্যন্তরে বিদ্যমান রোড, ড্রেন ও ফুটপাতের সংস্কার প্রকল্প; শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পার্শ্ব হতে ভুলতা পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প; সুগন্ধা মোড় সুগন্ধা পয়েন্ট-লাবণী পয়েন্ট সড়ক সংস্কারসহ প্রশস্তশরণ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প।

এছাড়া আরও কয়েকটি প্রকল্প হচ্ছে— নর্থ সাউথ-১ সংযোগ সড়ক নির্মাণ (চট্টগ্রামের জাকির হোসেন রোড হতে বায়েজিদ বোস্তামী সংযোগ সড়ক) প্রকল্প; খুলনা ও মোংলা মাস্টার প্ল্যান মূল্যায়নসহ কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকার জন্য সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্প; শেখ রাসেল সিভিক সেন্টার নির্মাণ প্রকল্প; বরেন্দ্র এলাকায় খালে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প-দ্বিতীয় পর্যায়; সেচ অবকাঠামো পুর্নবাসন প্রকল্প; সেচ যন্ত্রে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন এবং ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণের মাধ্যমে সেচ দক্ষতা বৃদ্ধি প্রকল্প; চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্প; আশুগঞ্জ-পলাশ সবুজ প্রকল্প; নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার নিষ্কাশন ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প; রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নদী তীর সংরক্ষণ, ছোট নদী, খাল-বিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন; চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প; রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে সেচ ড্রেইন নির্মাণ প্রকল্প; বাংলাদেশ পুলিশের ৭টি বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়ন; কেন্দ্রীয় পুশিল হাসপাতাল, রাজারবাগ, ঢাকার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প; ঢাকা বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল (২৫০ শয্যা বিশিষ্ট); এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প; জেলা সদর হাসপাতালে মাল্টি পারপাস ভবন নির্মাণ; পাবনা মানসিক হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ; মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো নিউরোসায়েন্স ইফনিট স্থাপন প্রকল্প; জেলা পর্যায়ে মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপন মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপন প্রকল্প; ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আধুনিকায়ন সম্প্রসারণ ও পুনর্নির্মাণ প্রকল্প এবং আর্সেনিক রোগীদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসা সেবা প্রকল্প।

সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম

এডিপি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর