Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মোবাইল উদ্ধারে গিয়ে মিলল ‘ভয়ংকর’ আস্তানা, গ্রেফতার ৬

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ মে ২০২১ ১৯:২৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নগরীতে এক যুবককে জিম্মি করে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল উদ্ধারে গিয়ে একটি অপরাধী চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। একইসঙ্গে সন্ধান পেয়েছে ভয়ংকর আস্তানার। যেখানে নিয়মিত মাদক ও অসামাজিক কাজের আসর বসে। এছাড়াও, লোকজনকে ধরে নিয়ে জিম্মি করে সেখানে নির্যাতন করে টাকা-মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১৭ মে) রাতে ডবলমুরিং থানার কাটা বটগাছ এলাকায় ওই আস্তানায় অভিযান চালিয়ে দুই তরুণীকে উদ্ধারের পাশাপাশি অপরাধী চক্রের ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার ছয়জন হলেন— আক্তার হোসেন (৬৩), আবু হোসেন টিপু (২৯), মজিবুল বশর রাজু (২০), আলমগীর হোসেন আলম (৩৫), ইকবাল হোসেন জুয়েল (৩১) এবং বেলাল খান (৩১)।

এ ব্যাপারে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন সারাবাংলাকে জানান, কাটা বটগাছ এলাকার জাফর সওদাগর ভবনের তৃতীয় তলায় রাজনৈতিক দাপট দেখিয়ে আস্তানাটি গড়ে তুলেছিল গ্রেফতার ছয়জনসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্র। সেখানে বিভিন্নস্থান থেকে তরুণীদের টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করে এনে জিম্মি করে রেখে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হত। সেখানে নিয়মিত বসে মাদকের আসর।

এর আগে, আবাসিক হোটেলে কর্মরত এক যুবককে ১৫ মে রাতে ওই আস্তানায় নিয়ে মারধর করে তিনটি মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

প্রথমে যুবক বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। সোমবার রাতে জুয়েলকে ওই ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন ওই যুবক এবং পুরো ঘটনা জানান। পুলিশ দ্রুত সেখানে অভিযান চালিয়ে দুই তরুণীকে উদ্ধার করে এবং গ্রেফতার করে ছয়জনকে।

ওসি জানান, অভিযান শুরুর পর পালাতে গিয়ে আক্তার পড়ে গিয়ে পা ভেঙ্গে ফেলায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি মহসীন বলেন, ‘দুই তরুণীকে থানায় আনার পর একজন জানান, তিনি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। সম্প্রতি চাকরি চলে যাওয়ায় পূর্ব পরিচিত আকাশ নামের এক যুবক চাকরির প্রলোভনে তাকে ওই আস্তানায় নিয়ে যায়। পরে তিনি জানতে পারেন, আকাশ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে আক্তারের কাছে বিক্রি করেছে। তাকে ১১ মে থেকে আটকে রেখে জোর করে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হয়েছে। বিভিন্নসময় পালানোর চেষ্টা করায় তাকে মারধর করা হয়। আরেক তরুণী জানিয়েছেন, তাকে ১৪ এপ্রিল থেকে আটকে রেখে একই কাজে বাধ্য করা হয়েছে।’

গ্রেফতার আক্তার জানিয়েছে, বাসাটি সে ভাড়া নিয়ে আস্তানা বানিয়েছে। আক্তার এবং টিপু সার্বক্ষণিকভাবে সেখানে অবস্থান করে। রাজু, আলমগীর এবং জুয়েলও সেখানে বিভিন্ন ধরনের লোকজন পাঠায় এবং নিয়মিত বাসাটিতে যাতায়াত করে মাদক সেবন করে – বলেন ওসি মহসীন।

এদিকে, গ্রেফতার জুয়েল নিজেকে সরকারি দলের নেতা হিসেবে পরিচয় দেন বলেও অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

ওসি জানান, মোবাইল ছিনতাইয়ের শিকার যুবক বাদি হয়ে জুয়েল, টিপু, রাজু ও আলমগীরের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছেন। আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া এক তরুণী ওই চারজন সহ মোট আটজনকে আসামি করে মানব পাচার আইনে মামলা করেছেন। যাতে পলাতক শুক্কুর ও আকাশ নামে আরও দু’জনকে আসামি করা হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/একেএম

আস্তানা গ্রেফতার চট্টগ্রাম ছিনতাই ডবলমুরিং মাদক সেবন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর