১৪০০ গভীর নলকূপ অকেজো, আমতলীতে সুপেয় পানির সংকট
২০ মে ২০২১ ০৮:২৮
বরগুনা: চৈত্র-বৈশাখ বলতে গেলে অনাবৃষ্টির কবলে ছিল দেশ। জ্যৈষ্ঠ মাসে অবশ্য কিছুটা বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু সেটাও আশানুরূপ নয়। এর মধ্যে যোগ হয়েছে প্রচণ্ড দাবদাহ। এসব কারণে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অনেক জায়গায় নিচে নেমে গেছে। ফলে গভীর নলকূপেও ঠিক মতো পানি উঠছে না। আবার অনেক জায়গায় নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে সুপেয় পানির সংকটে থাকা এমনই একটি উপজেলা বরগুনার আমতলী। এখানকার বেশিরভাগ গভীর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে দেখা দিয়েছে সুপয়ে পানির সংকট। ফলে মানুষ এখন অনিরাপদ উৎস থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছে। আর এ কারণে বাড়ছে বিভিন্ন রোগ বালাই।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধদিফতর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের তিন লাখ মানুষের পানির জন্য ৩ হাজার ৭০০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৪০০টির মতো গভীর নলকূপ দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।
সরকারের পলিসি অনুযায়ী, ৫০ জন মানুষের জন্য একটি করে গভীর নলকূপ থাকার কথা। কিন্তু উপজেলার আমতলী পৌরসভা, গুলিশাখালী, আঠারগাছিয়া, কুকুয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর ও আপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে প্রয়োজনীয় নলকূপ নেই। আর যেগুলো আছে তার অধিকাংশ অকেজো। এজন্য সেখানকার জনগণ বাধ্য হয়ে পুকুরের পানি পান করছেন।
এছাড়া সচল গভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণ থাকায় সুপয়ে পানির সংকটকে তীব্র করে তুলেছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রাম এলাকার মানুষদের। বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগতে থাকা উপজেলার বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগী জানায়, পানির অপ্রতুলতার কারণে তাদের দৈনন্দিন স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। গ্রামের মানুষ এখন অনিরাপদ উৎস থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছে। ফলে ডায়রিয়া-আমাশয়সহ বাড়ছে বিভিন্ন রোগ-বালাই।
হলদিয়া ইউপি সদস্য মো. আব্দুস সালাম লিটন মোল্লা বলেন, ‘গ্রামের অনেক নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে গ্রামের মানুষ পুকুরের পানি পান করছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, ‘বিশুদ্ধ পানির অভাবে গত এক মাসে আমতলী উপজেলায় ব্যাপক হারে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল। যা নিয়ন্ত্রণে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে।’
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধদিফতর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘অতি খরার কারণে পানির স্তর স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি নেমে যায়। বৃষ্টি না হওয়াটাও এর অন্যতম কারণ।’
অধিকাংশ গভীর নলকূপ অকেজো থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর অকেজো নলকূপগুলো মেরামত করা হবে।’
সারাবাংলা/পিটিএম