Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাংবাদিককে হেনস্তার প্রতিবাদ ও নিন্দা ঢাবি শিক্ষক সমিতির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২০ মে ২০২১ ১০:৩৬

ঢাকা: সচিবালয়ে দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও হয়রানির প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।

বুধবার (১৯ মে) ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়ার সই করা এক বিবৃতিতে সাংবাদিককে হয়রানির বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৭ মেএকটি জাতীয় দৈনিকের একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হেনস্তা, শারিরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং সচিবালয়ের মত জায়গায় এ ধরনের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে।

এতে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুসারে উক্ত সাংবাদিক স্বাস্থ্য সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি সরিয়েছেন এবং অনুমতি না নিয়ে নথির ছবি তুলেছেন। কিন্তু সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষ, যেখানে সচিব মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ প্রার্থীরা অপেক্ষমান থাকেন, সেখানে কোন রাষ্ট্রীয় স্পর্শকাতর গোপন নথি অন্যের দৃশ্যমানতায় রাখা কর্তব্যে অবহেলার শামিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন জেগেছে যে, ব্যক্তির অনিয়মের গোপন তথ্য রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে কিনা? সম্প্রতি উক্ত সাংবাদিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাষ্ট্রের স্বার্থকে সমুন্নত করলেও কারও কারও বিরাগভাজন হয়েছেন।

বিবৃতিদাতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান অতিমারী পরিস্থিতি মোকাবেলায় যে দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন তা সরকারের কতিপয় কর্মকর্তার দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ম্লান হতে দেওয়া যাবে না। কোনো ব্যক্তির অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ভার রাষ্ট্র ও সরকার নিতে পারেন না।

বিজ্ঞাপন

তারা বলেন, সমাজের যে কোনো অসঙ্গতি তুলে ধরাই গণমাধ্যমের কাজ। আর পেশাগত দায়িত্বপালনে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনানুসারে সুরাহা হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু উল্লিখিত সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ও অসুস্থ হওয়ার পরও সচিবালয়ের মত রাষ্ট্রের শীর্ষ প্রশাসনিক দপ্তরে দীর্ঘসময় ধরে আটকে রেখে মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনা চরম অপেশাদারিত্ব, কর্তৃত্ববাদী ও সন্ত্রাসী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।

এ ঘটনা সাধারণ মানুষের কাছে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের বিদ্যমান স্বাধীনতা সম্পর্কে একটি ভুল বার্তা দিচ্ছে বলেও মতামত দেন শিক্ষক নেতারা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা আশা করবো সরকার তার গৃহীত পদক্ষেপের মাধ্যমে এটিকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে প্রমাণ করবেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, সমাজের সুষম উন্নয়নের স্বার্থে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পেশার মানুষের মধ্যে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার সম্পর্ক বজায় থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আমলাতন্ত্রের কতিপয় ব্যক্তির অদক্ষতা, অপেশাদারিত্ব ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের কারণে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত অনেকের মধ্যে নানা সময়ে ক্ষোভ ও হতাশা লক্ষ করা গেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন কারার ষড়যন্ত্র কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এই অনাকাক্ষিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ ও অভিযুক্ত সাংবাদিকের আইনগত অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে মুক্ত-গণমাধ্যমের পরিপন্থি সকল প্রতিবন্ধকতা অপসারণের আহ্বান জানাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/এসএসএ

ঢাবি শিক্ষক সমিতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর