খালেদা জিয়া হার্ট ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন: মির্জা ফখরুল
২১ মে ২০২১ ১৬:৪৬
ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া করোনামুক্ত হওয়ার পর হার্ট ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। তবে তার শ্বাসকষ্ট এখন নেই।
শুক্রবার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা জানান।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম, রুহুল আমিন গাজী এবং বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরীসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল চিকিৎসকদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য জেনেছি। ওনার অক্সিজেন স্যাচুরেশন এখন বেশ ভালো, টেম্পারেচার এবং শ্বাসকষ্ট এখন নেই।’
‘কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো- করোনা পরবর্তী যে জটিলতা, সেই জটিলতায় তার হার্ট ও কিডনি একটু আক্রান্ত। এটা নিয়ে তারা (চিকিৎসক) অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। তারা (চিকিৎসক) চেষ্টা করছেন, এটাকে কীভাবে নিরাময় করা যায়’—বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। গতকাল রাতে আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। উনাকে দেখে একটু ভালো লেগেছে। কারণ, আমি তার মুখে একটু হাসি দেখেছি— যেটা এই কয়েকদিন ছিল না, একেবারেই ছিলো না। আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই চিকিৎসকদের। সম্পূর্ণ আন্তরিকতা নিয়ে তার চিকিৎসা করছেন। প্রতিদিন তার মেডিকেল বোর্ড করছেন এবং প্রতিদিন মনিটর করে চিকিৎসা দিচ্ছেন।’
‘একই সঙ্গে তারা আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে, ম্যাডাম সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। কারণ, আমরা সব সময় দোয়া করেছি এবং সারাদেশের মানুষও দোয়া করেছেন’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সাংবাদিক ভাই-বোনদের আহ্বান জানাব- আসুন আমরা মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বার্থে ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হই। তাহলে দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা গেলে ক্ষমতাই যারাই থাকুক কারও সঙ্গেই সরকার অন্যায় করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাকর্মী ও সাংবাদিক রোজিনা ইসলামসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সরকার এ পর্যন্ত যত অভিযোগ এনেছে তা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘বুঝলাম আপনারা সরকারের দুর্নীতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখতে পারবেন না। তাহলে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মানুষের ভোট ভাতের অধিকার আদায়ের পক্ষে থাকা গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে পোস্টমর্টেম করে অসত্য লেখেন কেন?’
তিনি বলেন, ‘আজ যদি সাগর-রুনি হত্যার বিচার হতো তাহলে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে এভাবে গ্রেপ্তার করার সাহস সরকার দেখাতে পারত না, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে কারাগারে রাখতে পারত না, নারী নেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরীকে মিথ্যা ভিত্তিহীন মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে রাখতে পারত না।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এসব নেতাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করে সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে না পারি, এই সরকারকে সরাতে না পারি একে একে আমাদের সবাইকে কারাগারে যেতে হবে।’
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল হাই সিকদার, সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/এমও