Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিলের বিষয়ে আদেশ বৃহস্পতিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৪ মে ২০২১ ১৭:২১

ঢাকা: মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার (২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও ডেন্টাল) প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করে নতুন মেধা তালিকা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।

সোমবার (২৪ মে) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

এর আগে, গত ১৯ মে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ত্রুটিপূর্ণ ফল বাতিল করে নতুন মেধা তালিকা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

ফেরদাওস জাহান মারিয়াসহ ৩২৪ পরীক্ষার্থীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও মোহাম্মদ কাওছার এ রিট দায়ের করেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়।

রিটে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ত্রুটিপূর্ণ ফল বাতিলপূর্বক নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করে মেডিকেল কলেজগুলোতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির আর্জি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ২২ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া মেডিকেল কলেজগুলোতে এমবিবিএস ভর্তি কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ফলাফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে বলে রিট আবেদনে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তবে তার মোট প্রাপ্তনম্বর থেকে ৭.৫ নম্বর কর্তন করা হবে। আবার কোনো পরীক্ষার্থী যদি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকে তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে। কিন্তু প্রকাশিত ফলাফল থেকে দেখা যায় অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এই নিয়মটি পালন করা হয়নি। যেসব পরীক্ষার্থীদের ৭.৫ নম্বর কর্তন করার কথা সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কর্তন করা হয়েছে। ফলে ওইসব ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ২.৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আবার প্রথমবার পরীক্ষায় যেখানে কোনো নম্বর কাটবার কথা নয় সেখানে অনেক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকেই ৫ নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দুটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল দুটি করে। সেই সঙ্গে অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না।

সংরক্ষিত জেলা ও উপজাতি কোটার আসন পূরণেও ব্যাপক অসঙ্গতি করা হয়েছে। ঢাকা জেলা কোটা আবেদনকারী পরীক্ষার্থীকে দেখানো হয়েছে মেহেরপুর জেলার পরীক্ষার্থী হিসেবে। উপজাতি কোটায় সংরক্ষিত আসনে অসংখ্য সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি রেখে মেধা তালিকা প্রণয়ন করার ফলে হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার মুখে পড়েছেন।

এসব কারণে প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করে এবং এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি সংশোধন করে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বরং ত্রুটিপূর্ণ মেধাতালিকার ভিত্তিতেই মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে আগামী ২২ মে হতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর অর্থই হলো প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা। তাদের আজীবন লালিত আকাঙ্ক্ষা চিকিৎসাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করা। সেই সঙ্গে দেশের সামগ্রিক জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া, যা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ৩১, ৩২ ও ৪০ এর পরিপন্থী।

বিজ্ঞাপন

এর আগে গত ১১ মে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল বাতিল করে পুনঃনিরীক্ষণপূর্বক নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর