চলাচল অযোগ্য সড়ক, সংস্কার না হওয়ায় বাড়ছে ঝুঁকি
২৫ মে ২০২১ ০৮:২৮
সুনামগঞ্জ: জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া বাজার থেকে পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলার বাংলাবাজার পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত বেহাল দশায়। সড়কটি যান ও জন চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। টানা কয়েক বছর সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
সড়কের মধ্যভাগে লোহার রড বের হয়ে থাকায় যেকোনো সময় প্রাণহাণিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি দফতরে সড়কটি সংস্করের জন্য আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি বলে জানা যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই লিখেছেন এ সড়ক নিয়ে, সেখানে ফুটে উঠেছে হতাশা ও ক্ষোভ।
স্থানীয়রা জানান, ভাটিপাড়া, রফিনগর, ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নসহ প্রায় হাজার হাজার লোকজন প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকে। সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে স্থানে স্থানে ভেঙে গিয়ে এত বেশি পরিমাণ কাদা সৃষ্টি হয়েছে একটি গাড়ির অর্ধেক অংশ মাটিতে দেবে যায়।
তারপরও সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে মিনি ট্রাক, পিকআপ, সিএনজি, আটোরিক্সা, মোটারসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের শতাধিক যানবাহন। এ সড়ক দিয়েই বিভিন্ন স্কুল কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ উপজেলা ও জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী, অসুস্থ ও বয়স্ক লোকজনের যাতায়াত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাথারিয়া-বাংলাবাজার সড়ক এখন এক একটি একটি মিনি পুকুরে রূপ নিয়েছে। ছোটবড় যানবাহন প্রতিদিন গর্তের মধ্যে আটকা পড়ছে। কখনও যাত্রীবাহী গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে।
ভাটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবু হানিফ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার হাজার হাজার কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন করছেন অথচ পাথারিয়া-বাংলাবাজার সড়ক মাত্র সাড়ে ১১ কিলোমিটার দূরত্ব। এই রাস্তা দিয়ে জেলার ৩টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে প্রতিদিন ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে মানুষ প্রতিনিয়িত দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। অবিলম্বে পাথারিয়া-বাংলাবাজার রাস্তা সংস্কার করে দিতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা মহিবুর তালুকদার বলেন, ‘সরকারের কত টাকা কতদিকে ব্যয় হচ্ছে কিন্তু ওই সাড়ে ১১ কিলোমিটার রাস্তা আমাদের জীবন অতিষ্ঠ করে দিচ্ছে। আমি সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই দ্রুত ওই রাস্তাটি যেন মেরামত করা হয়।’
শিমুলবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জিতু বলেন, ‘পাথারিয়া-বাংলাবাজার সড়ক এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভাঙা রাস্তার ফলে এলাবাবাসী চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। আমরা এলাকাবাসীর ব্যানারে অনেকবার সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি। কিন্তু অনেক আশ্বাসের পরও আমাদের এই সড়কের দাবিটি অধরাই রয়ে গেছে। যদি রাস্তাটি সংস্কার করা হয় তবে এই এলাকার মানুষের জীবনের ব্যাপক উন্নতি হবে।’
দিরাই উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘এই সড়ক ঠিক করতে পরিকল্পনা মন্ত্রীর সুপারিশে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটা প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। আমি আশাবাদী এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুতই সংস্কার করা হবে।’
সারাবাংলা/এমও