বারডেমে দু’জনের শরীরে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’, পরীক্ষা করছে আইইডিসিআর
২৫ মে ২০২১ ১৩:৩৮
ঢাকা: দেশে দু’জন ব্যক্তির শরীরে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে বারডেম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একজনের শরীরে ৮ মে থেকেই এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে পরীক্ষার আগে কোনো কিছু নিশ্চিত করে বলা যাবে না বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পরই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব।
বারডেম হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. লাভলি বাড়ৈ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রথমে আমরা ৮ মে এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস পেয়েছি। যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকে তাদেরই গ্রুপ অফ ফাঙ্গাস থাকে। আমাদের ল্যাবে সাধারণত কফ স্যাম্পল আসে তবে পেশেন্টের ডিটেইলস হিস্ট্রি আসে না। তবে আমরা এই ‘গ্রুপ অফ ফাঙ্গাস’ শনাক্ত করেছি। তবে আমরা আশঙ্কা করছি এটা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ হতে পারে বলে। এর আগে আমরা একজন পেশেন্টের কাছ থেকে এই গ্রুপের ফাঙ্গাস শনাক্ত করেছি। পরে আমরা জেনেছি তিনি কোভিড-১৯ সংক্রমিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘করোনার আগেও আমরা এই গ্রুপ অব ফাঙ্গাস শনাক্ত করেছি। সম্প্রতি আমরা দুইজন পেশেন্টের মাঝে গ্রুপ অফ ফাঙ্গাস পেয়েছি। যার মধ্যে একজনের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বিষয়ে কনফার্ম হতে পেরেছি। আরেকজনের মাইক্রোস্কোপে দেখে সাসপেক্ট করেছি। এখন সেটার কালচার আসার জন্য অপেক্ষায় আছি। আবার কালচারেও অনেক সময় গ্রুপ অফ ফাঙ্গাস ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে মিস হতে পারে। আমরা অপেক্ষা করছি এখনো। একজন পেশেন্টকে এন্টি ফাঙ্গাল দেওয়া হচ্ছে, সেটা রেসপন্স করে নাই। গতকাল থেকে বিউকল গ্রুপ অফ ফাঙ্গাসের ট্রিটমেন্ট শুরু করা হয়েছে। এখন আমরা অপেক্ষা করছি সেটার রেসপন্স দেখার জন্য। আর যদি এর মধ্যে কালচার চলে আসে তবে তা ভালো।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুইজনই পোস্ট কোভিড পেশেন্ট। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তারা দুইজনেই বাংলাদেশের নাগরিক যাদের ভারত ভ্রমণের হিস্ট্রি নেই। আরেকটি হাসপাতাল থেকে তাদের রেফার করে এখানে পাঠানো হয়। এন্টি ফাঙ্গাল ট্রিটমেন্টে যখন রেসপন্স করে নাই তখন তাদের নমুনা আবার পাঠানো হয়। এটা কিন্তু আমাদের এখানে নতুন না, আমরা আগেও এমনটা পেয়েছি।’
বারডেমে পাওয়া যাওয়া এই দুইজন রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে আইইডিসিআর এর পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষার আগে তো এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাবে না। তারা বর্তমানে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের নমুনা এনে পরীক্ষা করা হবে। আমাদের এখানে নমুনা পরীক্ষা করে তারপর নিশ্চিত বলা যাবে রোগীরা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কিনা।’
উল্লেখ্য, ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাককে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ইতোমধ্যেই। বাংলাদেশেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে করোনার মধ্যে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যে জানিয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসা এবং ব্যবস্থাপনা কেমন হবে তা নিয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এসবি/এমও