চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের পটিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন মোহাম্মদ সৈয়দ নামে একজন আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানও। হামলায় এক হাতের চার আঙুল বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আহত মোহাম্মদ সৈয়দের ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একজন প্রতিদ্বন্দ্বীর ইন্ধনে তার ওপর হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (২৬ মে) দুপুর ১টার দিকে পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত মোহাম্মদ সৈয়দকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মোহাম্মদ সৈয়দ দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এছাড়া নাটকসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত সৈয়দ পটিয়া থিয়েটারের সভাপতি ও আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা।
মোহাম্মদ সৈয়দ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কেনা আড়াই কানি জমির ওপর কিছু লোক জোরপূর্বক বালির বস্তা দিয়ে গত রাতে (মঙ্গলবার) রাস্তা তৈরি করে। খবর পেয়ে আমি ও আমার ভাই ইউনূস সকালে সেখানে যাই। আমরা বালির বস্তাগুলো সরানোর উদ্যোগ নিই। তখন অতর্কিতে সন্ত্রাসীরা রামদা-কিরিচসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমার বাম হাতের চারটি আঙুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাথায় আঘাত পেয়েছি। ডাক্তার বলেছেন, কাল (বৃহস্পতিবার) সকালে উনারা অপারেশন করে আঙুলগুলো জোড়া লাগানোর চেষ্টা করবেন। তা না হলে ঢাকায় যেতে হবে।’
সৈয়দের ঘনিষ্ঠ পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুদ্দিন পলাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সৈয়দ ভাই আবারও প্রার্থী হবেন। সেজন্য প্রতিদ্বন্দ্বী একজন উনার পেছনে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছেন। উনাদের খরিদা সম্পত্তিতে রাস্তা তৈরি করে উসকানিমূলক পরিস্থিতি তৈরি করে হামলা করেছে। কয়েকজন মাদকসেবী, ভূমিদস্যুকে ব্যবহার করে সৈয়দ ভাইদের হয়রানি করা হচ্ছে।’
জানতে চাইলে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। জানতে পেরেছি, সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সৈয়দ সাহেব কিছু জায়গা কিনেছেন। জায়গা বিক্রির সময় তাকে বলা হয়েছিল, তার কেনা জায়গার ওপর বিক্রেতাদের রাস্তা তৈরির সুযোগ যেন দেওয়া হয়। তিনি সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি তার জমির ওপর রাস্তা করতে দিতে রাজি হননি। এ নিয়ে বিরোধের শুরু। গত রাতে জোরপূর্বক রাস্তা তৈরি করা হয়। আজ (বুধবার) সকালে তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে।’
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি রেজাউল করিম।
এদিকে আহত মোহাম্মদ সৈয়দকে হাসপাতালে নেওয়ার পর বিকেলে প্রতিপক্ষের অনুসারী কিছু তরুণ-যুবক সেখানে ভিড় করেন এবং হুমকিধমকি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে সৈয়দের স্বজনরা বিষয়টি চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে জানালে ওই তরুণ-যুবকরা সেখান থেকে সটকে পড়েন।
চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানার পর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে যাই। যারা হুমকি দিতে এসেছিলেন, ততক্ষণে তারা সরে যান। আমরা রোগী ও তাদের স্বজনদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে নজরদারিতে রেখেছি। এখানে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না।’