Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পিতলের ডিমে ফুঁ দিয়ে দ্বিগুণ টাকার প্রলোভন, ‘দাদা’ গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ মে ২০২১ ১৭:২৩

ঢাকা: মো. নুরুল হক ওরফে ‘দাদা’। মানুষজনকে বলতেন, দীর্ঘ ৫ বছর জঙ্গলে ধ্যান করে আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হয়েছেন। নামে-বেনামে রয়েছে তার বিভিন্ন কোম্পানি। এসব কোম্পানির সদস্য হলে মানুষজনকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার প্রলোভন দেখাতেন তিনি। এভাবে তাদের তিন থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সদস্য করতেন। কেউ লভ্যাংশ বা মূল টাকা ফেরত চাইলে ‘দাদা’ তাদের পিতলের ডিম ও পিতলের দরজা বানিয়ে আনতে বলতেন। এরপর তিনি তার আধ্যাত্মিক শক্তির দোহাই দিয়ে মন্ত্র পড়ে তাতে ফুঁ ও হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিতেন। পরে সেটি বাসায় রেখে প্রতিনিয়ত মোমবাতি জ্বালিয়ে গোলাপ জল দেওয়ার পরামর্শ দিতেন। এতে নাকি অটোমেটিকভাবে লভ্যাংশের দ্বিগুণ টাকা তার ঘরে পৌঁছে যাবে।

কোম্পানির সদস্যদের শাখা প্রধান, জোন প্রধান, হাই কমান্ড, পরিচালক ইত্যাদি পদ দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই নুরুল হক ওরফে দাদা। প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তাকে রাজধানীর মতিঝিল এলাকা গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (২৭ মে) গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদ এসব তথ্য জানান।

ডিসি রাজীব বলেন, ‘মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিল থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই আধ্যাত্মিক প্রতারক মো. নুরুল হক ওরফে দাদাকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম। নুরুল হক নিজেকে একজন আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে জাহির করতেন। মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তিনি বলতেন, দীর্ঘ ৫ বছর জঙ্গলে ধ্যান করে আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হয়েছেন তিনি। এরপর সেই শক্তির জোরে বর্তমানে তিনি অফুরন্ত ধন-সম্পদের মালিক।’

প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা পুলিশের এসি মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘প্রতারক নুরুল হক নিজেকে আগাম করপোরেশন, আগাম বহুমুখী ফার্ম, পিটি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, এমএম এন্টারপ্রাইজ নামের বহু কোম্পানির মালিক দাবি করতেন। এই কোম্পানিগুলোর অধীনে তার বাবু নগর প্রকল্প, সোনামনি নগর প্রকল্প, সরল পথ প্রকল্প, গাভী পালন প্রকল্প, এমএম মৎস্য খামরসহ শতাধিক প্রকল্প রয়েছে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালাতেন। এই প্রকল্প এবং কোম্পানির সদস্য হলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। এভাবে তিন হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সদস্য বানাতেন। সদস্যদের শাখা প্রধান, জোন প্রধান, হাই কমান্ড, পরিচালক ইত্যাদি পদ দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন অতিক্রম হওয়ার পরও প্রতারণার স্বীকার ব্যক্তিরা নুরুল হকের কাছ থেকে লভ্যাংশ বা মূল টাকা ফেরত চাইলে সে তাদের পিতলের ডিম, পিতলের দরজা ইত্যাদি বানিয়ে আনতে বলতেন। তার আধ্যাত্মিক শক্তির দোহাই দিয়ে মন্ত্র পড়ে তাতে ফুঁ ও হাত দিয়ে ছুয়ে দিতেন। এরপর তা বাসায় রেখে প্রতিনিয়ত মোমবাতি জ্বালিয়ে গোলাপ জল ছিটিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিতেন। এতে নাকি অটোমেটিকভাবে লভ্যাংশের দ্বিগুণ টাকা তার ঘরে পৌঁছে যাবে। এভাবেই তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।’

গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক প্রতারণার অভিযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেফতার ‘দাদা’কে তুরাগ থানায় দায়ের করা প্রতারণার মামলায় রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

গ্রেফতার টপ নিউজ দাদা দ্বিগুণ টাকা পিতলের ডিম প্রলোভন ফুঁ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর