চট্টগ্রাম ব্যুরো: দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনে অগ্রাধিকার কর্মসূচি অনুযায়ী মশা নিধন করতে না পারার জন্য ‘নগরবাসীর অসচেতনাকে’ দায়ী করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তবে ১০০ দিনের মধ্যে নগরীর ভাঙা রাস্তাঘাট সংস্কারে শতভাগ সফল হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) নগরীর টাইগার পাসে চসিকের অস্থায়ী ভবনে ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের চতুর্থ সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এসব বিষয়ে কথা বলেন। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা এবং সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদসহ বিভাগীয় প্রধানরা জুম অ্যাপের মাধ্যমে অংশ নেন।
সভায় মশা নিধনের প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘মশা নিধনে যতটুকু সফলতা আসার কথা, সেটা আসেনি। এর মূল কারণ নগরবাসীর অসচেতনতা। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে খালের বিভিন্ন অংশে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এতে জমে থাকা পানিতে মশার অবাধ প্রজনন হচ্ছে। তরল ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এজন্য কাঙ্ক্ষিত ফল আমরা পাইনি। তরল ওষুধের গুণাগুণ যাচাইয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী মশা নিধনের কাজ আবার শুরু হবে।’
‘এই নগর আমার একার নয়, এটা সবার শহর। তাই নিজ স্বার্থে নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। চট্টগ্রামকে সর্বসাধারণের বাসযোগ্য ও আন্তর্জাতিক মানের নগরীতে পরিণত করতে আমি সবার সহযোগিতা চাই।’
সড়ক সংস্কারে শতভাগ সাফল্যের দাবি করে তিনি বলেন, ‘১০০ দিনের মধ্যে জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ভাঙা রাস্তাঘাট মেরামত শুরু করেছিলাম। এক্ষেত্রে শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আবর্জনা পরিষ্কারের বিষয়টি দৃশ্যমান হয়েছে। কিছু সীমাবদ্ধতাও চিহ্নিত করা গেছে।’
১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মসূচিতে সাফল্য সন্তোষজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বেশকিছু সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করা গেছে। এসব সীমাবদ্ধতার কারণে পুরোপুরি সাফলতা আসেনি।’
১০০ দিনের কার্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী নগরীর ৩০টি রাস্তায় ৭৬ কিলোমিটার অংশে পোল বসিয়ে এলইডি লাইট স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান মেয়র। এ ছাড়া নগরীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে জিরো টলারেন্স প্রদর্শনের জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নির্দেশনা দেন তিনি।
গত ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেন। নির্বাচনের আগে ২৩ জানুয়ারি রেজাউল ৩৭ দফার ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। এতে প্রধান প্রতিশ্রুতি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন জলাবদ্ধতা নিরসন। ঘোষণা করেছিলেন ১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মসূচিও।
তবে দায়িত্ব গ্রহণের দিন সুধী সমাবেশে রেজাউল প্রথম কাজ হিসেবে মশা নিধনের ঘোষণা দেন। এছাড়া ১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মসূচির মধ্যে নগরীর ভাঙা রাস্তাঘাট মেরামতের ঘোষণাও তিনি দিয়েছিলেন। ২০ ফেব্রুয়ারি নিজ এলাকা নগরীর চান্দগাঁও ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ১০০ দিনের কর্মসূচি শুরু করেছিলেন মেয়র রেজাউল।