ধর্মের নামে দুষ্কৃতিকারীদের মুখোশ উন্মোচনের অনুরোধ তথ্যমন্ত্রীর
২৭ মে ২০২১ ২৩:০২
ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ইসলামের কথা বলে যারা মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়, ভূমি অফিস জ্বালিয়ে দেয়, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়, এরা ইসলামের শত্রু। তাদের চিহ্নিত করে মুখোশ উন্মোচন ও বর্জন করতে আলেমদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘ধর্মের নামে অরাজকতা, তথাকথিত ধর্মীয় নেতাদের ধর্মহীনতা এবং শান্তির ধর্ম ইসলাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যক্তি ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহারকারীরা আলেমদের শত্রু। প্রকৃত আলেমদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে না। তারা আল্লাহপাকের কাছে প্রার্থনা করেন, মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করার জন্য বয়ান করেন। কিন্তু আজ কিছু আলেম নামধারী ব্যক্তি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে নিজেদের আখের গোছানোতে লিপ্ত।
উদাহরণ দিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা দেখেছেন বাবুনাগরী-মামুনুল হকের অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি বেরিয়ে এসেছে। কোন দেশে দোকান আছে, কয়টা লরি আছে— এগুলো বেরিয়ে এসেছে। মাদরাসা দেখিয়ে বিভিন্ন দেশ ও দেশের বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে থেকে তারা চাঁদা সংগ্রহ করে। আর সেই টাকা দিয়ে পরস্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে যায় ফূর্তি করার জন্য। এমনকি জাকাত-ফিতরার টাকাও তারা আরাম আয়েশের জন্য নিজেদের অ্যাকাউন্টে নিয়ে গেছে। এরা কী আলেম! এরা আলেম নামধারী কলঙ্ক।
বিএনপি সরকার ইসলামের কথা বলে আলেম-ওলামাদের অনেক কিছু দেবে বলেও কোনো কিছু দেয়নি— এ কথ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার আলেম-ওলামাদের জন্য অনেক কাজ করেছে। ভবিষ্যতেও করবে। বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই আজকে ইসলামের খেদমতে নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কওমি সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন, তাদের সরকারি চাকরিও দিয়েছেন। তার নির্দেশে সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ, প্রায় ৮৪ হাজার মসজিদভিত্তিক মক্তব, প্রতিটি মক্তবের আলেমকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার বিষয়টি জনগণকে জানানো প্রয়োজন। আবার তারা ইসলামের কথা বলে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে— এটিও জনগণকে আপনাদের জানানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
ইসলামের সেবায় সরকারের বহুমুখী কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আলেমদের গ্রেফতার করেনি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে অপরাজনৈতিক চিন্তা থেকে অঘটন ঘটানোর অপতৎপরতায় লিপ্ত জঙ্গিবাদী-সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করেছে। এরাই আমরা আলেমদের গ্রেফতার করেছি— এই কথা বিভিন্ন আঙ্গিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর চেষ্টা করে। আমি মনে করি তারা বাঙালির জাতি, ইসলাম ও দেশের শত্রু।
ইউনাইটেড ইসলামী পাটির চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য ড. মুফতি মাওলানা কাফিল উদ্দিন সরকার সালেহী প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। ইউনাইটেড ইসলামী পাটির মহাসচিব শাইখুল হাদিস মাওলানা মুফতি শাহাদাত হোসাইনও সভায় বক্তব্য রাখেন। সভাশেষে দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রার্থনায় যোগ দেন সবাই।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর