Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আপনাদের কিন্তু একটা অধিকার আছে আমার ওপর’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৯ মে ২০২১ ১৭:০৭

ঢাকা: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরতদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি শুধু প্রধানমন্ত্রী না, আমি জাতির পিতারও মেয়ে। সেই হিসেবে আপনাদের কিন্তু একটা অধিকার আছে আমার ওপর। কাজেই আপনাদের যদি কোনো অসুবিধা থাকে, যদি কোনো প্রশ্ন থাকে- আপনারা করতে পারেন বিনা দ্বিধায়।

শনিবার (২৯ মে) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২১’ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠনে শান্তিরক্ষী মিশনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পরিবারের সদস্য এবং আহত শান্তিরক্ষীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় এবং মিশনে দায়িত্বরত কয়েকটি দেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মতবিনিময় করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে সত্যিই আমি আনন্দিত। বর্তমানে সারাবিশ্বে শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক শান্তিরক্ষী কাজ করছে। ৬ হাজার ৭৪২ জন গর্বের সঙ্গে বিশ্বে শান্তি রক্ষায় অবদান রেখে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের আপনারা প্রতিনিধিত্ব করছেন, দেশের সম্মানের জন্য নিজেদের জীবন বাজি রেখে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় অবদান রেখে যাচ্ছেন। আমাদের আরও গর্বের বিষয়, এখানে নারীরাও রয়েছেন। প্রায় ২৮৪জন নারী শান্তিরক্ষী মিশনে কাজ করে যাচ্ছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেসব এলাকায় আপনারা এখন কাজ করছেন, সেখানে কঠিন সময় পার হতে হয়। সেখানকার আবহাওয়া ও পরিবেশ সবকিছুই ভিন্ন ধরনের। বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সেই আলাদা পরিবেশে আপনারা কষ্ট করে কাজ করে যাচ্ছেন মানবতার জন্য, মানব কল্যাণের জন্য। সবচেয়ে বড় কথা শান্তি রক্ষার জন্য। সেজন্য আপানাদের অভিনন্দন জানাই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষী হিসেবে কতগুলো সুর্নিদিষ্ট কর্মসূচি থাকে। কিন্তু তারপরও মানবিক দিকটা আপনাদের মাঝে ফুটে উঠেছে, এটাই সবচেয়ে বড় কথা। সেজন্য আপনাদের নিয়ে গর্ববোধ করি। যেখানেই আপনারা যাচ্ছেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। আর আপনাদের এই মানবিক গুণের জন্যই আমি বলতে পারি, বাংলাদেশ থেকে শান্তিরক্ষী নেওয়ার চাহিদাটা জাতিসংঘের সবসময় একটু বেশি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তার কথা ছিল, তিনি বিশ্ব শান্তির জন্যই কাজ করবেন। তিনি সবসময় চেয়েছেন, সারাবিশ্বে শান্তি ফিরে আসুক। শান্তির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি এবং দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়- সেটাই ছিল তার মূল লক্ষ্য। তিনি শুধু নিজের দেশের জন্য নয়, প্রতিবেশি দেশসহ সমগ্র বিশ্বে যেন শান্তি ফিরে আসে সেটাই চেয়েছিলেন। আমরা সেই ধারাবাহিকতায় নিজেদের যেমন ভালোবাসি, তেমনি যেখানেই নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষ আছে, শোষিত বঞ্চিত মানুষ আছে- তাদের পাশে আছি।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে একটু কথা বলতে চাই। আপনারা যারা বাইরে আছেন, কেমন আছেন- সেটা জানতে চাচ্ছি। আপনাদের যদি কোনো কিছু জানার থাকে মন খুলে কথা বলতে পারেন। আপনাদের কিছু বলার আছে আমাকে? কিছু প্রশ্ন আছে? আমি শুধু প্রধানমন্ত্রী না, আমি জাতির পিতারও মেয়ে। সেই হিসেবে আপনাদের কিন্তু একটা অধিকার আছে আমার ওপর। কাজেই আপনাদের যদি কোনো অসুবিধা থাকে, যদি কোনো প্রশ্ন থাকে- আপনারা কিন্তু করতে পারেন বিনা দ্বিধায়।

এ সময় সেনাকুঞ্জ প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন শহিদ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পরিবারের সদস্য এবং আহত শান্তিরক্ষীদের প্রতিনিধিদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এছাড়া সেনাকুঞ্জে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সামরিক ও অসামরিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর