চলন্ত বাসে তরুণীকে গণধর্ষণ: চালকের স্বীকারোক্তি, ৫ জন রিমান্ডে
২৯ মে ২০২১ ১৮:২৮
ঢাকা: আশুলিয়ায় মহাসড়কে চলন্ত মিনিবাসে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাসচালক সুমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলায় গ্রেফতার বাকি পাঁচ আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (২৯ মে) বিকেলে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাদী তাহমিদার আদালত স্বীরোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. জিয়াউল ইসলাম ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করেন। এ সময় আসামি সুমন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড এবং অপর পাঁচ আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
আরও পড়ুন- আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে তরুণীকে গণধর্ষণ, আটক ৬
ঢাকা জেলা কোর্ট পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আশুলিয়া থেকে গণধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার ছয় আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এদের মধ্যে আসামি চালক সুমন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুনানি শেষে বাকি পাঁচ আসামির প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
আশুলিয়া পুলিশের বরাত দিয়ে আশুলিয়া থেকে সারাবাংলার লোকাল করেসপন্ডেন্ট শরিফ শেখ জানিয়েছেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া সুমন (২৪) বগুড়া জেলার ধুনট থানার খাটিয়ামারি এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন— ঢাকার তুরাগ থানার গুলবাগ ইন্দ্রপুর ভাসমান গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে আরিয়ান (১৮), কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার তারাগুনা এলাকার মৃত আতিয়ারের ছেলে সাজু (২০), নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার ধামঘর এলাকার জহুর উদ্দিনের ছেলে মনোয়ার (২৪), বগুড়া জেলার ধুনট থানার খাটিয়ামারি এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সোহাগ (২৫) ও বগুড়া জেলার ধুপচাচিয়া থানার জিয়ানগর গ্রামের সামছুলের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০)। আসামিরা সবাই তুরাগ থানার কামারপারা এলাকায় ভাড়া থেকে আব্দুল্লাহপুর, বাইপাইল, নবীনগর মহাসড়কে মিনিবাস চালান।
এর আগে, শুক্রবার (২৮ মে) রাতে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। জানা যায়, গত ২৮ মে নায়ারণগঞ্জের চাষাড়া থেকে এক নারী শ্রমিক মানিকগঞ্জে বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। পরে ওই নারী মানিকগঞ্জ থেকে নায়ারণগঞ্জ যাওয়ার জন্য একটি বাসে করে আশুলিয়ার নবীনগর আসেন। পরে তিনি নবীনগরে তার একপূর্ব পরিচিত ভাইয়ের সঙ্গে একটি মিনি বাসে উঠলে বাসের চালক ২০ মাইল নবীনগরের মাঝে ডিসি নার্সারির সামনে এসে নারীর সঙ্গে থাকা ওই যুবককে বেঁধে ফেলেন।
পরে বিভিন্ন গাড়ির ছয়জন ড্রাইভার ও হেলপার মিলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ভুক্তভোগী ওই নারী চিৎকার দিলে মহাসড়কে টহলরত সাভার হাইওয়ে পুলিশ ওই গাড়িটি আটক করে। সেই সঙ্গে ধর্ষণকারী ছয় জনকেও আটক করে এবং ওই নারীকে উদ্ধার করে। পরে সকালে তাদের সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগী ওই নারী শ্রমিক ছয় জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
সারাবাংলা/এআই/এনএস