Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্রমিক নির্যাতন: চীনা কোম্পানির জাহাজে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৯ মে ২০২১ ২০:১৩

শুক্রবার চীনের একটি সামুদ্রিক মাছ রফতানিকারক কোম্পানির অন্তত ৩০টি জাহাজের বহরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ডালিয়ান ওশেন ফিশিং নামক ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। সিএনবিসির খবর।

গতবছর চীনের ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে জাহাজে কর্মরত শ্রমিকদের নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। সেসময় কয়েকজন শ্রমিকের মৃত্যুরও খবর পাওয়া যায়। পরে এ নিয়ে কয়েকটি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান তদন্ত শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

এর জেরে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস ও সীমান্ত প্রতিরক্ষা বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, ডালিয়ান ওশেন ফিশিং নামক ওই কোম্পানির ৩০টির বেশি জাহাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম আইনের আওতায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম আইনের অধীনে শ্রমিকদের জোর করে পণ্য উৎপাদন করানো হয়েছে এমন সন্দেহযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পণ্য যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায়।

ওপর এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান আলেজান্দ্রো মায়োরকাস বলেন, ‘যেসব কোম্পানি শ্রমিক নির্যাতন করে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করার কোনো অধিকার নেই’।

এর আগেও ডালিয়ান ওশেনের বিরুদ্ধে কয়েকটি মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন নানা ইস্যুতে অভিযোগ এনেছিল। সর্বশেষ দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক সংগঠন অ্যাডভোকেটস ফর পাবলিক ল অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্টাল জাস্টির ফাউন্ডেশন গত বছর ডালিয়ান ওশেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলে, লং জিং ৬২৯ নামক একটি জাহাজের শ্রমিকদের জন্য কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি কোম্পানিটি। ওই জাহাজের চারজন ক্রু কোনো এক অনিশ্চিত রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসার অভাবে ওই জাহাজেই তিন ইন্দোনেশিয়ান শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। আরেক শ্রমিক দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন। মৃতদের মরদেহ জাহাজ থেকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

ওই জাহাজের কাজ করা ইন্দোনেশিয়ার শ্রমিকরা তাদের অভিযোগে বলেন, দৈনিক ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করা হতো তাদের। বিপরীতে তাদের পাওনা মাসিক বেতনের ৩০০ ডলার কখনই পুরোপুরি দেওয়া হতো না। জাহাজে প্রতিমাসেই তাদের বেতন কাটা হতো। বছর পেরোলেও কোনো বন্দরে নামতে দেওয়া হতো না এবং পান করার জন্য সমুদ্রের লবণাক্ত পানি দেওয়া হতো তাদের।

ডালিয়ান ওশেন ফিশিং নামক কোম্পানিটি মূলত উচ্চমানের টুনা রফতানি করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এ কোম্পানি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে ২ কোটি ডলারের সামুদ্রিক মাছ আমদানি করেছিল। তবে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ডালিয়ানের রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে কমে মাত্র ১৮ লাখ ডলারে নেমে আসে। পরের বছর ২০২০ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৩ লাখ ২১ হাজার ডলারে। চলতি বছরে ডালিয়ান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এ বছর এপ্রিল পর্যন্ত ওই কোম্পানি থেকে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ডলারের সামুদ্রিক মাছ আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে শুক্রবার দেশটির নেওয়ায় এমন সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাষ্ট্রের ডালিয়ানের রফতানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।

সারাবাংলা/আইই

টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর