নওগাঁয় রঙের ড্রাম থেকে লাশ উদ্ধার, ১ মাস পর রহস্য উদঘাটন
৩০ মে ২০২১ ১৭:৩৭
নওগাঁ: হত্যাকাণ্ডের এক মাস ১০ দিন পর রহস্য উদঘাটন করেছে নওগাঁ জেলা পুলিশ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল দুই আসামিসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে, গত ১৯ এপ্রিল উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের মারিয়া গ্রামের একটি পুকুরে হলুদ রঙের ড্রামে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রোববার (৩০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান মিয়া।
এক লিখিত বক্তব্যে আব্দুল মান্নান মিয়া জানান, গত ১৯ এপ্রিল ওই এলাকার গ্রামপুলিশ আব্দুল আজিজের মাধ্যমে রানীনগর থানার পুলিশ সংবাদ পায়— উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের মারিয়া গ্রামের একটি পুকুরে হলুদ রঙের ড্রামে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ ভাসছে। সকাল সাড়ে ৮টায় থানা পুলিশ, পিবিআই নওগাঁ ও সিআইডি ক্রাইম সিন রাজশাহী স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করে। নিহত ব্যক্তির অনুমানিক বয়স ৩৫ বছর। লাশের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারাল অস্ত্রের আঘাত ছিল।
পুলিশের ধারণা, গত ১৮ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিল ভোরবেলার মধ্যে যেকোনো এক সময় তাকে হত্যা করে এখানে ফেলে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানের নির্দেশে পুলিশের কর্মকর্তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ের নিহতের পরিচয় উদঘাটিত হয়। নিহত ব্যক্তির নাম মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি আত্রাই উপজেলার বাউল্যাপাড়া গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নিহত শহিদুল ইসলাম গত ১৭ এপ্রিল ট্রাক্টরের ট্রলি কেনার জন্য এক লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নওগাঁ শহরের উদ্দেশে যান। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পরওয়া যায় এবং আর বাড়িতে ফিরে যাননি তিনি। তদন্তের এক পর্যায়ে গত ২৮ মে পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে আত্রাই উপজেলার বাজেধনেশ্বর গ্রামের মমতাজ সরদারের ছেলে মো. আলম সরদার (৩৫) ও বাউল্যাপাড়া গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে মামুনুর রশিদ ঋতু (২১) এবং মান্দা উপজেলার বড়পই গ্রামের ইয়াছিন দেওয়ানের ছেলে মো. জুয়েল রানা ও মৃত বয়েন উদ্দিনের ছেলে মো. বুলবুল হোসেনকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেই তথ্য অনুযায়ী পুলিশ ওই দিনই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মান্দা উপজেলার দূর্গাপুর মধ্য পাড়ার মৃত আব্দুস সামাদ ওরফে লাটুর ছেলে মো. সজিব (২৩) এবং দূর্গাপুর সোনারপাড়া গ্রামের মো. বাহার আলীর ছেলে মো. সোয়েল রানাকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ওই লাশ বহনকারী পিকআপ ভ্যানটি (ঢাকা-মেট্রো-ন-১৪-৮৪৫৫) উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা জানিয়েছে, জনৈক মো. আব্দুল জব্বারের ভাড়া বাসায় শহিদুল ইসলামকে হত্যা করে তারা। এরপর রাত অনুমান ১১টায় লাশ ড্রামে ভরে পিকআপ ভ্যানে করে ঘটনাস্থলে ফেলে আসে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
তদন্ত শেষে গতকাল শনিবার (২৯ মে) আসামিদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। পরে আসামিরা স্বেচ্ছায় ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে।
সারাবাংলা/এনএস
নওগাঁ রঙের ড্রামে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন