সিগারেট লুট, কুবি শিক্ষার্থীসহ গ্রেফতার ৩
৩১ মে ২০২১ ২০:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে আবুল খায়ের গ্রুপের পরিবেশকের গুদামে ডাকাতির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে একজন ডাকাতিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। শিক্ষার্থী ও তার বাবা লুটের সিগারেট কিনেছিল।
সোমবার (৩১ মে) নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) আব্দুল ওয়ারীশ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গতকাল রোববার (৩০ মে) নগরীর ডবলমুরিং থানা পুলিশ চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতারের পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে লুট করা সিগারেট।
গ্রেফতারকৃত তিনজন হলেন— মো. নূর নবী (৩০) এবং ছাত্র এনায়েত উল্লাহ শান্ত (২৬) ও তার বাবা মো. শাহজাহান (৬০)।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত শান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইয়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী। কুমিল্লা সদরে তার বাবার একটি দোকান আছে। সেখানে শান্তও বসেন। লুট করা সিগারেট নূর নবী ওই দোকানে বিক্রি করেছিল।
গত ২৭ মে ভোরে নগরীর পোস্তারপাড়া এলাকায় আবুল খায়ের গ্রপের ডিলার খাজা ট্রেডার্সের গুদামে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতের দল স্টোর কিপারকে জিম্মি করে প্রায় ৩৩ লাখ টাকার সিগারেট লুট করে নেয়।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তিনজনকে গ্রেফতারের পর সোমবার সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) আব্দুল ওয়ারীশ জানান, রোববার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড থেকে নূর নবীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কুমিল্লা সদরের পশ্চিম বাগিচাগাঁও থেকে বাবা-ছেলেকে গ্রেফতার ও লুট করা ৯২ কার্টন সিগারেট জব্দ করা হয়।
আবুল খায়ের গ্রুপের পরিবেশক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতিতে নূর নবীর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন অংশ নিয়েছিল বলে তিনি জানান।
ওয়ারীশ আরও জানান, আবুল খায়েরের পরিবেশক প্রতিষ্ঠান থেকে লুট করা ৩৩ লাখ টাকার সিগারেট তারা কুমিল্লায় নিয়ে গিয়ে ১৯ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়।
ওসি মহসীন জানান, নূর নবীর নেতৃত্বে দলটিতে অন্তত ২৫ জন সদস্য আছে। কুড়িগ্রাম, সিলেট, নারায়নগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় দলটি ডাকাতি করেছে।
গত মার্চে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় নৈশ প্রহরীকে খুন করে সিগারেট লুটের ঘটনায়ও এ চক্রটি জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সহজে বিক্রি, বহন ও রাখার সুবিধার্থে সিগারেট লুট করে করে। ডাকাতি করতে বাধা পেলে খুন কিংবা অস্ত্রবাজি করে থাকে।’
নূর নবীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি মহসীন আরও জানান, এ চক্রটি কুড়িগ্রামেও প্রহরীকে খুন করে সিগারেট লুটের ঘটনা ঘটায়। এছাড়া কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাধা পেয়ে গোলাগুলি করে তারা পালিয়ে আসে। গত কয়েক মাসে শুধু চট্টগ্রামের চান্দগাঁও কামাল বাজারে রফিক স্টোর নামে একটি দোকান থেকে ২৫ লাখ টাকার ৭৩ কার্টন, সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের আফজাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান থেকে ২২ লাখ টাকা দামের ৬৩ কার্টন ও নগদ দেড় লাখ টাকা, ডবলমুরিং থানার পোস্তার পাড়া থেকে ৩৩ লাখ টাকার ৯৪ কার্টন সিগারেট লুট করে।
এর পাশাপাশি চাঁদপুরের কচুয়া থেকে সাইফুল স্টোর নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ২২ কার্টন সিগারেট নগদ সাড়ে চার লাখ টাকা ও টেকনাফের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২২ লাখ টাকার সিগারেট লুট করেছে নূর নবীর বাহিনী।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস