অর্থনীতি সমিতির ১৭ লাখ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব
১ জুন ২০২১ ১৯:৫৮
ঢাকা: আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য ১৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (১ জুন) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ‘কোভিড-১৯ ও আর্থসামাজিক মন্দা থেকে উত্তরণে বিকল্প বাজেট: ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবনা’ শিরোনামে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বিকল্প বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন।
আবুল বারকাত বলেন, আমরা মনে করি অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেট হবে সম্প্রসারণমূলক। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ১৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৬ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছি, যা বর্তমান সরকারের যে বাজেট চলছে তার তুলনায় ৩ দশমিক শূন্য ৬ গুণ বেশি।
তিনি বলেন, বিকল্প বাজেটের রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৬ লাখ ৩ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। এটি প্রস্তাবিত মোট বাজেটের ৯২ দশমিক ২০ শতাংশ জোগান দেবে রাজস্ব খাত। মোট রাজস্ব আয়ের ৭৯ শতাংশ হবে প্রত্যক্ষ কর এবং ২১ শতাংশ হবে পরোক্ষ কর।
বাজেটের ঘাটতি ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে উল্লেখ করে আবুল বারকাত বলেন, ‘এই ঘাটতি মেটাতে আমরা কোনো ব্যাংক ঋণ ও কোনো ধরনের বৈদেশিক ঋণ নেব না। ব্যাংকের ঋণ সরকারের জন্য না। বাজেটের ঘাটতি পূরণ হবে বন্ড বাজার, সঞ্চয়পত্র ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে মাধ্যমে।
তিনি বলেন, ঘাটতি মোকাবিলায় মধ্যে বন্ড বাজার থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা আনা সম্ভব। এই টাকা দিয়ে ঘাটতির ৫১ দশমিক ৯০ শতাংশ পূরণ করা যাবে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে আসবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। অবশিষ্ট ২৫ হাজার কোটি টাকা আসবে সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব থেকে।
১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত মোট পুঞ্জিভূত কালো টাকার পরিমাণ আনুমানিক ৮৮ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা হবে বলে জানান আবুল বারকাত। একই সময়ে পাচার করা টাকার পরিমাণ ৭ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা বলে জানিয়ে এখান থেকে সম্পদ কর ৫০ লাখ কোটি টাকা আহরণ সম্ভব এবং একবছরে বিকল্প বাজেটের জন্য কমপক্ষে ১ লাখ কোটি টাকা আহরণ সম্ভব বলে মত দেন তিনি।
বিকল্প বাজেট প্রস্তাবে আবুল বারকাত ছয়টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।এগুলো হলো— ধনী-বিত্তশালীদের ওপর সম্পদ কর আরোপ করা, সুপার-ডুপার ধনীদের ক্ষেত্রে কর হার বাড়ানো, শেয়ারবাজার ও বন্ডবাজারে বড় বিনিয়োগের ওপর সম্পদ কর আরোপ করা, অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর আরোপ করা, কালো টাকা বাজেয়াপ্ত ও উদ্ধার করা এবং পাচার করা অর্থ উদ্ধার করা। এছাড়াও বিকল্প বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ জিডিপির কমপক্ষে ৫ শতাংশ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর আগে, গত বছরের ৮ জুন ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট ঘোষণা করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি (বিআইএ)। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় দেখানো হয় ১২ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি রাখা হয়।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর