স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ২ শতাংশেরও বেশি
২ জুন ২০২১ ১২:০২
ঢাকা: ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রথমবারের মতো বাজেটের প্রায় ৭ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সরকার এবার স্বাস্থ্য খাতের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কোভিড আক্রান্ত কেউ যেন বিনাচিকিৎসায় মারা না যায় সেলক্ষ্যে মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোকে অত্যাধুনিক করা হবে। স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করতে নতুন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। পাশাপাশি বর্তমানে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যও বাজেটে সুখবর থাকছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ঘোষণা থাকতে পারে।
জানা গেছে, আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। এটি বাজেটের প্রায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং জিডিপির ১ দশমিক ৩ শতাংশ। গত সাত অর্থবছরে এ বরাদ্দ কখনোই ৫ শতাংশের ওপরে যায়নি। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। যা ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছর থেকে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ প্রায় ৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের সরকারি হাসপাতালে ৫০৮টি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৭৩৭টি আইসিইউ শয্যা আছে। বাজেটে সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সরঞ্জাম ও ভেন্টিলেটরের সংখ্যাও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এসব সরঞ্জাম আমদানি থাকবে করমুক্ত। এছাড়াও কোভিড মোকাবিলায় নতুন করে ২ হাজার চিকিৎসক, ৬ হাজার নার্স ও ৭৩২ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। এরজন্য বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে। চলতি বাজেটে গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসকের সংখ্যা ও সেবার মান বাড়াতে বরাদ্দ রয়েছে ৩৭৫ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, চলতি বাজেটে চিকিৎসকদের সম্মানি ভাতার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কোভিড চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণকারী চিকিৎসকদের এককালীন সম্মানী ভাতাও দেওয়া হচ্ছে। বাজেটে ভাতার পাশাপাশি দেওয়া হতে পারে ঝুঁকি ভাতাও। সেইসঙ্গে আসতে পারে বিশেষ প্রণোদনার ঘোষণা। প্রণোদনা এবং বিভিন্ন ভাতার জন্য আগামী বাজেটে থাকছে ৮৫০ কোটি টাকা। কোভিড প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা কেনা বাবদ সরকার চলতি অর্থবছর ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রেখেছে। আগামী বাজেটেও ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে আধুনিক সেবা ও অনলাইনে বিশেষায়িত সেবা দিতে চলতি অর্থবছর এ খাতে ১৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আগামী বাজেটে তা বাড়িয়ে ২০০ কোটি টাকা করা হতে পারে। এছাড়াও স্বাস্থ্যখাত উন্নয়নে গবেষণার জন্য আসছে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। চলতি অর্থবছর ‘সমন্বিত স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিল’ নামে একটি তহবিল গঠন করে সরকার। এ জন্য বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতের গবেষণার জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র পাঁচ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার জন্য বরাদ্দ দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। মাথাপিছু স্বাস্থ্য ব্যয় ১১০ ডলার মাত্র।
সারাবাংলা/জিএস/এএম