এমসি কলেজে গণধর্ষণ: অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে বরখাস্তের নির্দেশ
২ জুন ২০২১ ১৬:০০
ঢাকা: সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কমরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
এর আগে গতকাল (১ জুন) সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় জারি করা রুলের রায়ের জন্য আজ (২ জুন) দিন ধার্য রেখেছিলেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনা অনুসন্ধানে চার সদস্যের যৌথ কমিটি গঠন করেন হাইকোর্ট। চার সদস্যের ওই কমিটিতে ছিলেন, সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানা।
পরে অনুসন্ধান কমিটি হাইকোর্টে তাদের প্রতিবেদনে জানায়, সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে এমসি কলেজের অধ্যক্ষও কোনোভাবেই ওই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের পেছনে মূলত হোস্টেলের বর্তমান হোস্টেল সুপার (তত্ত্বাবধায়ক), হোস্টেলের মূল গেটের ডে গার্ড, ৫ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ড (নৈশপ্রহরী) এবং ৭ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ডের দায়িত্বে অবহেলা ছিল।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বিকেলে দক্ষিণ সুরমার নবদম্পতি প্রাইভেটকার যোগে এমসি কলেজে বেড়াতে যান। বিকেলে এমসি কলেজের ছাত্রলীগের ছয়জন নেতাকর্মী স্বামী-স্ত্রীকে ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে প্রথমে মারধর করেন। পরে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী ওইদিন (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বাদী হয়ে নগরের শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও দু-তিনজনকে আসামি করা হয়।
এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- এম সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত।
এরপর পুলিশ অভিযানে নেমে সাইফুরের কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন শাহপরান (র.) থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন সরকার। ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় করা আরও দুটি (চাঁদাবাজি ও ধর্ষণ) মামলা সিলেটের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম
এমসি কলেজ কলেজ অধ্যক্ষ গৃহবধূ ধর্ষণ টপ নিউজ নির্দেশ বরখাস্ত হাইকোর্ট হোস্টেল সুপার