সরকার যা চায়, বিচার ব্যবস্থা তাই করে— মির্জা ফখরুল
৩ জুন ২০২১ ০০:১৩
ঢাকা: বিচার ব্যবস্থা একটা দলের হাতে পড়ে গেছে। সরকার যা চায়, বিচার ব্যবস্থা তাই করে। সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা দেওয়া হয়েছে সে মামলা টিকেই না। তাকে পাঁচ বছরের পরে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সরকারের ইচ্ছামত ফরমায়েশি রায় দেওয়া হয়েছে। রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে তিনি কারাবরণ করেছেন এবং কারাগারে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকরা তার উন্নত চিকিৎসার কথা বার বার বলেছেন। কিংবা দলীয়ভাবেও যখন এই কথাগুলো বলা হয়েছে তারা নাকচ করে দিয়েছেন।
বুধবার (২ জুন) ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী সমিতি ভবনে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন, তার ব্যাপারে আলোচনা অল্প সময়ে সম্ভব নয়।জিয়াউর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার জন্য আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ২৫ মার্চ রাতে গোটা জাতি অপেক্ষা করছিল রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে তারা একটা নির্দেশ পাওয়ার জন্য। কিন্তু, দুর্ভোগের কথা কোনো নির্দেশ পাওয়া যায়নি। শুধু পাওয়া যায়নি তাই নয়, দেখা গেছে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতারা নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে। এবং মূলনেতা যিনি ছিলেন তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। অন্যান্য নেতৃবৃন্দও সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।
সেই সময়ের এক অখ্যাত ব্যক্তি, কেউ চিনতো না জানতো না তিনি সামনে এসে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন।
শুধু যুদ্ধ ঘোষণা করেই ক্ষান্ত হননি। পরবর্তীকালে সংগঠন করেছেন। দেশের সেনাবাহিনী এবং জনগণকে সংগঠিত করে রণাঙ্গনের মতো যুদ্ধ করেছেন— বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা এসেছে ঠিক কিন্তু সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতা বলতে যা বুঝায় তা মানুষ পায়নি। কারণ, স্বাধীন হওয়ার পরে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপরিচালনের দায়িত্বে এসেছে। কিছুদিনের মধ্যেই তারা গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার গণতান্ত্রিক উদার রাষ্ট্রব্যবস্থা-ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা-সাম্য প্রতিষ্ঠাকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়ে দলীয় লোক দিয়ে যে প্রভাব বিস্তার শুরু করে এবং পরবর্তীকালে সারাবাংলায় একটা লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করে। দলীয় শাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়ে একদলীয় সরকার কায়েম করে আওয়ামী লীগ। যারা এর প্রতিবাদ করেছিল, তাদেরকে দমন-প্রতিহত করার জন্য শেখ মুজিবের ছিল রক্ষীবাহিনী। রক্ষীবাহিনী ভিন্ন মতামতকে নির্মমভাবে দমন করেছে।
তথ্যমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নাকি শুধু খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করছি, রাজনীতি করছি। ওনার লজ্জা হওয়া উচিত। যে ব্যক্তি গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য রাজপথে যুদ্ধ করছেন, কারাবরণ করেছেন তাকে নিয়ে কথা বলবেন না? আপনি যে জায়গায় আছেন, সেই জায়গায় থাকুন, খালেদা জিয়ার নাগাল পেতে হলে আপনাকে বহুদূর যেতে হবে, যেটা আপনাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’
ওই দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. ফজলুর রহমান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, এম মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ওমর ফারুক ফারকীসহ আরও অনেকে।
সারাবাংলা/এআই/একেএম
দোয়া ও মিলাদ মাহফিল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর