বর্ষায় গলা পানিতে ডুববে চট্টগ্রাম, আশঙ্কা মেয়রের
৩ জুন ২০২১ ১৫:৪০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আসন্ন বর্ষায় চট্টগ্রাম নগরী গলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন খালে দেওয়া অস্থায়ী বাঁধ অপসারণের পক্ষে মত দিয়েছেন মেয়র।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরোনো নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মসূচির অগ্রগতি জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেন মেয়র রেজাউল।
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন খালের ভেতরের অংশে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছে।
খালে দেওয়া বাঁধের কারণে ময়লা-আবর্জনা জমে মশার উৎপাত বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক জলাবদ্ধতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানান মেয়র।
তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন বলে জানান মেয়র। তিনি জানান, খাল ও বড় নালা-নর্দমাগুলো সিডিএর আওতায় থাকায় সিটি করপোরেশন এখন ছোট নালাগুলো থেকে মাটি উত্তোলনের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রথম ১০০ দিনের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। নগরীর উন্নয়নে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে- সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বৃদ্ধি ও উন্নয়নের বিভিন্ন পরিকল্পনা।
প্রথম ১০০ দিনে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে ৯০ ভাগ সাফল্যের দাবিও করেছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘নাগরিক অসচেতনতার কারণে যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা এবং জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে বিভিন্ন খালের ভেতর বাঁধ দেওয়ায় মশার উৎপাত বেড়েছে। আর মশা মারার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও নেই। ফলে মশক নিধনে শতভাগ সাফল্য আসেনি।’
মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র। প্রথম ১০০ দিনে সার্বিক বিবেচনায় সড়ক সংস্কার কাজের সিংহভাগ অগ্রগতি হয়েছে বলেও দাবি মেয়রের।
মেয়রের জন্য কোটি টাকা দামের নতুন গাড়ি কেনা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গাড়ি কিনতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু এই গাড়ি নিয়ে চারবার পথে আটকে গেছি।’
দরপত্র দেওয়া হলেও এখনো গাড়ি কেনার অনুমতি দেননি তিনি, এমন দাবি মেয়রের। ‘রাজনীতি করে এই পদে এসেছি। প্রয়োজনে ট্যাক্সি নিয়েও আসতে পারব। সমস্যা নেই।’- বলেন মেয়র
সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অনিয়ম প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র রেজাউল বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের অতীতের অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেউ কেউ তথ্য-উপাত্তবিহীন ও ভিত্তিহীন বিভিন্ন অপপ্রচার করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দিন ও আফরোজা কালাম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসসহ বিভাগীয় প্রধানরা ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এএম