ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর অপরিবর্তিত রাখা হলেও কমেছে ব্যক্তি মালিকানাধীন সব ধরনের কোম্পানির করপোরেট কর। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকা বর্তিভূত কোম্পানির করপোরেট কর ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানোর সুপারিশ করেছে অর্থমন্ত্রী। তবে একক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার পুঁজিবাজিারে তালিকাভুক্ত ও তালিকা বহির্ভূত ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিদ্যামান করের হার সাড়ে ৩৭ শতাংশ ও ৪০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী করপোরেট কর বিষয়ক এসব তথ্য তুলে ধরেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিডে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিতে গতি ফেরানো, নতুন কর্মসংস্থান এবং স্থানীয় শিল্পে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে কর কমানো হয়েছে। এছাড়াও কোভিডে ক্ষতিগ্রস্ত বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ও তালিকা বহির্ভূত কোম্পানির ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিদ্যামন কর ২৫ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমিয়ে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও পুঁজিবাজারে তালিকা বহির্ভূত কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকা বহির্ভূত উভয় ধরনের ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিদ্যামান ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং তালিকা বহির্ভূত ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর ৪০ শতাংশ বহাল রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সব ধরনের মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট কর বিদ্যমান ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সব ধরনের তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানির বিদ্যামান আড়াই শতাংশ সারচার্জসহ ৪৫ শতাংশ করপোরেট কর বহাল রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মোবাইল কোম্পানির বিদ্যমান ৪০ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত নয় এমন মোবাইল কোম্পানির বিদ্যমান করপোরেট কর ৪৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে পাবলিকলি ট্রেডেড মোবাইল ফাইন্যান্সসিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ৩৭ শতাংশ এবং পাবলিকলি ট্রেডেড নয়— এমন মোবাইল ফাইন্যান্সসিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাড়ে ৭ শতাংশ বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ব্যক্তিসংঘের করহার সাড়ে ৩২ শতাংশ কমিয়ে ৩০ শতাংশ এবং কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা ও অনান্য করযোগ্য সত্তার করহার ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদান করছে— এমন বেসরকারি কলেজের ১৫ শতাংশ কর নির্ধারণ করা হয়েছে।