আরেক দফায় সস্তা হবে তামাকপণ্য, বাড়বে তামাকজনতি ক্ষতি
৩ জুন ২০২১ ১৮:১৮
ঢাকা: ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট বাজারের প্রায় ৭২ শতাংশ দখলে থাকা নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অথচ আগের বছরের তুলনায় জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৯ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে সিগারেটের প্রকৃত মূল্য কমবে। তাতে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী ধূমপানে উৎসাহিত হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানিয়েছেন প্রগতির জন্য জ্ঞানের (প্রজ্ঞা) প্রকল্প প্রধান মো. হাসান শাহরিয়ার।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় হাসান শাহরিয়ার বলেন, বাজেটে বিড়ি ও বহুল ব্যবহৃদ জর্দা-গুলের শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ, বিশেষত নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে লাভবান হবে তামাক কোম্পানি। সরকার হারাবে রাজস্ব আয়ের সুযোগ। লাখ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু, পঙ্গুত্ব ও তামাকের নানাবিধ আর্থসামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষতি অগ্রাহ্য করে তামাক ব্যবসা উৎসাহিত করার এই বাজেট প্রস্তাব সার্বিকভাবে চরম হতাশাজনক এবং একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিবৃতিতে প্রজ্ঞার প্রকল্প প্রধান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম ও শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়ছে। উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের দাম যথাক্রমে ৫ টাকা (৫.২%) এবং ৭ টাকা (৫.৫%) বাড়িয়ে ১০২ টাকা ও ১৩৫ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। উভয় স্তরেই ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে। এর ফলে উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের প্রতি শলাকা সিগারেটের দাম বাড়বে যথাক্রমে ৫০ পয়সা ও ৭০ পয়সা, যা মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির তুলনায় অতি নগণ্য।
তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে ত্রুটিপূর্ণ কর কাঠামোর কারণে এই দামবৃদ্ধির একটি অংশ তামাক কোম্পানির পকেটে চলে যাবে। তামাক কোম্পানিগুলোর আয় বাড়বে। তারা মৃত্যু বিপণনে আরও উৎসাহিত হবে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অথচ তামাকবিরোধীদের দাবি অনুযায়ী মূল্যস্তরভিত্তিক সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করলে সরকার অতিরিক্ত ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় র্অজন করত, যা করোনা মহামারি সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ব্যবহার করা সম্ভব হতো।
জনস্বাস্থ্যরে জন্য মারাত্মক ক্ষতকির বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য র্জদা, গুলের কর ও মূল্য প্রস্তাবিত বাজেটে অপরিবির্তিত রাখাকে হতাশাজনক অভিহিত করে হাসান শাহরিয়ার বলেন, বাস্তবতা হলো— মোট তামাক রাজস্বের ১ শতাংশেরও কম আসে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য থেকে। সরকার ধারাবাহিকভাবে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য থেকে বাড়তি রাজস্ব আয়ের ব্যাপক সুযোগ হারাচ্ছে। এভাবে তামাক কোম্পানিকে সুবিধা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন সম্ভব নয়।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর